সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সরাসরি বিচারব্যবস্থাকে নিশানা করলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়। তাঁর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট যেভাবে আইনসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছে, সেটা করা যায় না। এভাবে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে কেউ বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করতে পারে না।
গত ১১ এপ্রিল আইনসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে ঐতিহাসিক মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, আইনসভা থেকে পাশ হয়ে আসা বিল অনন্তকাল আটকে রাখতে পারেন না রাষ্ট্রপতি। তিনমাসের মধ্যে তাঁকে মতামত জানিয়ে দিতে হবে। রাজ্যপালদের জন্যও ওই একই নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্যপালের কাছ থেকে আসা বিলে তিনমাসের মধ্যে মতামত জানিয়ে দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। যদি তিনমাসের মধ্যে তা সম্ভব না হয়, তাহলে দেরি হওয়ার যথাযথ কারণ জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।
উপরাষ্ট্রপতি এভাবে রাষ্ট্রপতিকে ডেডলাইন বেঁধে দেওয়াটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর প্রশ্ন, “কোন পথে এগোচ্ছে আমাদের দেশ। এ দেশে হচ্ছেটা কী? আমরা গণতন্ত্রের সঙ্গে কোনওদিন আপস করিনি। আজকের দিনটা দেখার জন্য তো এত সংগ্রাম করিনি। এখন দেখা যাচ্ছে, ভারতের রাষ্ট্রপতিকেও একটা বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এটা তো আর সামান্য কিছু নিয়ে মতামত দেওয়া নয়। এখানে বলা হচ্ছে, সময়মতো সিদ্ধান্ত না নিলে বিল আইনে পরিণত হবে।”
দিন কয়েক আগে দিল্লি হাই কোর্টের এক বিচারপতির বাড়ি থেকে প্রচুর নগদ উদ্ধার হয়ছে। অথচ সেই বিচারপতির বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। সেই প্রসঙ্গ তুলে উপরাষ্ট্রপতির বক্তব্য, “সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রপতিকে কোনও কিছু নিয়ে নির্দেশ দিচ্ছে, এমন একটা পরিস্থিতি মেনে নেওয়া যায় না। এখন যা পরিস্থিতি তাতে বিচারপতিরাই আইন তৈরি করছেন। তাঁরাই নির্দেশ কার্যকর করছেন। এই বিচারপতিরাই সুপার পার্লামেন্ট হিসাবে কাজ করছেন। কিন্তু বিচারপতিদের কোনওরকম কোনও জবাবদিহি করতে হয় না। কারণ, এই দেশের আইনে সেই দায়বদ্ধতার জায়গাটাই নেই।” সরাসরি বিচারব্যবস্থাকে নিশানা করে ধনকড় বলছেন, “কীসের ভিত্তিতে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে? বিচারব্যবস্থা সংবিধানের ১৪২ ধারাকে মিসাইলের মতো ব্যবহার করছে।” কি এই সংবিধানের ১৪২ ধারা? এই ধারায় বলা আছে, সম্পূর্ণ সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট চাইলে আইনের বেড়াজাল টপকে নির্দেশিকা জারি করতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.