বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: দেশে বেকারত্ব কীভাবে কমবে, টাকার পতন কীভাবে থামবে, কোভিডের সময়ে দেশের যত মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন তার মধ্যে কত জন কাজ ফিরে পেয়েছেন, ভোজ্য তেলের দাম কবে কমবে কিংবা বেসরকারি ক্ষেত্রে লগ্নি কত হয়েছে- কোনও প্রশ্নেরই উত্তর নেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের কাছে। অথচ এরপরেও কেন্দ্রের দাবি, ২০২৬ সালের মধ্যে ভারত ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলবে।
সোমবার সংসদের অর্থবিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের আধিকারিকদের তুলোধোনা করলেন প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা। এমনকি সরকারপক্ষ, অর্থাৎ বিজেপি সাংসদেরও কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে এদিন। কংগ্রেস (Congress) সাংসদ মনীশ তিওয়ারি, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়েদের চোখা চোখা প্রশ্নে একপ্রকার নিরুত্তরই ছিলেন দেশের তাবড় তাবড় অর্থ বিষয়ক আধিকারিকেরা। বিরোধী সাংসদরা তো বটেই, এদিনের বৈঠকে খোদ বিজেপি সাংসদ সুশীল মোদিও আধিকারিকদের কড়া প্রশ্ন করেছেন বলেই সূত্রের খবর।
এদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন নীতি আয়োগের সিইও পরমেশ্বরন আইয়ার, মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা, অর্থমন্ত্রকের সচিব এবং অর্থ বিষয়ক দফতরের সচিব। এদিনের বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল দেশের সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা এবং ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির রোডম্যাপ তৈরি। সেখানে সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে ‘বিশ্বের অর্থনীতির তুলনায় আমাদের দেশের অর্থনীতি ভাল অবস্থায় রয়েছে’। দেশে বেকারত্ব কমবে বলে তাঁরা দাবি করতেই আধিকারিকদের চেপে ধরেন সৌগতবাবুরা। কীভাবে কমবে তা জানতে চাইলে তার কোনও সদুত্তোর দিতে পারেননি কেউই।
আধিকারিকরা দাবি করেন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে শহরাঞ্চলের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভাল। কারণ, গ্রাম থেকে লোকজন শহরে কাজের জন্য ফিরছে। তখনই বিরোধীদের তরফে পাল্টা প্রশ্ন ওঠে কোভিডের সময় দেশে কত মানুষ কাজ হারিয়েছিল এবং তাদের মধ্যে কত জন কাজ ফিরে পেয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তরেও কিছুই জানাতে পারেননি আধিকারিকরা।
দেশে লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বিশেষ করে ভোজ্য তেলের দাম (Inflation) যেভাবে বেড়েছে তা কীভাবে কমবে সেই প্রশ্নেরও সদুত্তর দিতে পারেনি আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, বিরোধীদের টাকার দামের পতন নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে তারা যুক্তি দিয়েছেন, আমেরিকার মতো দেশে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেশি। সরকারের পক্ষ থেকে আধিকারিকেরা দেশের জিডিপির বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতি ৬ শতাংশের নীচে রয়েছে বলে জানিয়ে দাবি করেছেন যে বৃদ্ধির হার একই থাকলে ২০২৬ সালের মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব হবে। কিন্তু থামানো যায়নি বিরোধীদের। আধিকারিকেরা প্রভিডেন্ড ফান্ডের তথ্যও তুলে ধরেছিলেন বলেই জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.