সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মজুত মাত্র ৩ দিনের কয়লা। খুব দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দেশজুড়ে বড়সড় কয়লা সংকটের আশঙ্কা। যার ফলাফল মারাত্মক। ব্ল্যাক-আউট (Black out) হয়ে যেতে পারে গোটা দেশ। যার প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে রাজধানী দিল্লি-সহ গোটা রাজধানী সংলগ্ন এলাকায়। রাজধানীর আশেপাশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মজুত আরও কম। যে কারণে ইতিমধ্যেই দিল্লিবাসীকে সম্ভাব্য বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সতর্ক করেছে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি। আগামী দিনে গোটা দেশেই এই পরিস্থিতি হতে পারে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, দেশজুড়ে এ হেন সংকটের কারণ কী? ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এর পিছনে মূল দুটি কারণ হল আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার মূল্যবৃদ্ধি এবং সরকারের নীতি পঙ্গুত্ব। প্রথমত, লকডাউন (Lock Down) শেষে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হারে বেড়েছে কয়লার চাহিদা। বিশেষ করে চিনের বাজারে কয়লার চাহিদা চরমে। যার ফলে ভারত যে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করে, সেখানকার একটা বড় অংশের কয়লা চলে যাচ্ছে চিনে। ফলে ইন্দোনেশিয়ায় এই মুহূর্তে কয়লার দাম দ্বিগুণেরও বেশি। গত মাসে যেখানে ইন্দোনেশিয়ায় এক টন কয়লার দাম ছিল ৮৬ ডলার, সেখানে এমাসে সেই কয়লার দাম ১৬২ ডলার। এই বিপুল দামে কয়লা আমদানি ভারতের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
দ্বিতীয় কারণ হল, সরকারের নীতি পঙ্গুত্ব। কেন্দ্রের শক্তিমন্ত্রী আর কে সিং স্বীকার করে নিয়েছেন, লকডাউনের পরে দেশে কয়লার চাহিদা এতটা বেড়ে যাবে তাঁরা প্রত্যাশা করেননি। কেন্দ্রের দাবি, দেশের আর্থিক উন্নতির ফলে কয়লার চাহিদা বাড়ছে। আর এই বিপুল চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে খনিগুলি। যদিও, এর কারণ হিসাবে প্রচুর বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছে সরকার। কিন্তু প্রশ্ন হল, বৃষ্টি তো আগেও হয়েছে। এতদিন তো সংকট এই পর্যায়ে এসে পৌঁছায়নি?
তাছাড়া, এই সমস্যা আরও গভীরে। ইউপিএ (UPA) জমানায় দুর্নীতির অভিযোগে সেসময়ের খনি বণ্টন বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিজেপি সরকার আসার পর কেন্দ্রের উচিত ছিল নতুন নতুন কয়লা খনি খুঁজে বার করা। এবং নতুন করে খনি বণ্টন করা। কিন্তু সেটা করা হয়নি। বদলে কোল ইন্ডিয়াকে (Coal India) ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানে শৌচাগার তৈরির ভার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। মোদি ২০১৪-র অক্টোবরে স্বচ্ছ ভারত অভিযান ঘোষণার পরেই কোল ইন্ডিয়া ২৩৫ কোটি টাকা খরচ করে ১ লক্ষ বাড়িতে ও ৬ হাজার স্কুলে শৌচাগার বানিয়েছে। এই কাজ করতে গিয়ে কোথাও নতুন কয়লা খনি খোঁজার কাজটা সঠিকভাবে করা হয়নি। যার ফলে দেশের বিপুল চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে তাঁরা। দ্রুত এই সমস্যা সমাধান না করলে আগামী দিনেও কয়লা সংকট চলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.