সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “আমি এখনই মরতে চাই না। দেখে যেতে চাই ধর্ষকরা ফাঁসিতে ঝুলছে।” মৃত্যুর আগে নিজের পরিবারকে বলেছিলেন বছর তেইশের যুবতী। এটিই ছিল তাঁর শেষ ইচ্ছা। মৃত্যুশয্যা থেকেই তিনি কাতরভাবে আবেদন জানান, দোষীদের একজনও যেন ছাড়া না পায়। কিন্তু, সেই ইচ্ছা পূরণ হওয়ার আগেই চলে যেতে হল তাঁকে। গতকাল রাতে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে উন্নাওয়ের অগ্নিদগ্ধ নির্যাতিতা তরুণীর।
গতবছর উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের একটি গ্রামে গণধর্ষণ করা হয় বছর তেইশের ওই যুবতীকে। সেই ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। পরে স্থানীয় আদালতের নির্দেশে গ্রামেরই দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও সে কিছুদিনের মধ্যেই জামিনও পেয়ে যায়। জামিন পেয়েই বদলা নেওয়ার চেষ্টা করে সেই নরপিশাচ। প্রকাশ্য রাস্তায় নির্যাতিতার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালে ৪০ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ভয়াবহ মৃত্যুর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত বাঁচতে চেয়েছিলেন সেই তরুণী। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নির্যাতিতার ভাই বলেন, “ও বলেছিল, আমাকে মরতে দিও না। আমাকে বাঁচিয়ে নাও। যাঁরা আমার সাথে এটা করেছে, তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেখে যেতে চাই।” মৃতার পরিবারের সদস্যরাও ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডই চাইছেন। তাঁদের অভিযোগ, নির্যাতিতার পরে তাঁদেরও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গতবছর ১২ ডিসেম্বর উন্নাওয়ের এক গ্রামে ধর্ষণ করা হয় তরুণীকে। এবছর মার্চ মাসে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। শিবম ও শুভম ত্রিবেদী নামের দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তাঁদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সে জামিনও পেয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার এই মামলা সংক্রান্ত তথ্য দিতেই আদালতে যাচ্ছিলেন নির্যাতিতা। সেসময় তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় ওই ধর্ষকরাই। শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ পোড়া অবস্থাতেই এক কিলোমিটার দৌড়ে পুলিশের কাছে যান ওই নির্যাতিতা। পুলিশ তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করে। পরে স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.