সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর তিনেক আগে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল হিমালয়ের কোলের ছোট্ট দেশ নেপাল। মারা গিয়েছিলেন প্রায় ৯০ হাজার মানুষ। দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে যাবতীয় ঐতিহাসিক স্থাপত্য কার্যত গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। আবারও তেমনই এক মহাপ্রলয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে নেপালে কম্পনের মাত্রা ছিল ৮.১। এবারে তা আরও ভয়াবহ হতে পারে, যার কম্পনের মাত্রা হতে পারে ৮.৫ পর্যন্ত। আরও বিপদের কথা, এবারের ভূমিকম্পটি হতে পারে খাস হিমালয় পর্বতমালার কেন্দ্রস্থলে। যার ভয়াবহতা কতটা, কী পরিমাণ ধ্বংসলীলা চলতে পারে এর ফলে তা আন্দাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বিজ্ঞানীদের তরফেও।
প্লেট টেকটনিক থিওরি অনুয়ায়ী, ভূগর্ভে চলমান প্লেটের উপর অবস্থান করছে ভূপৃষ্ঠ। হিমালয় যে প্লেটটির উপর অবস্থান করছে, সেই হিমালয়ান প্লেটের উপর দীর্ঘদিন ধরে চাপ পড়ছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে হিমালয়ান প্লেটের একটি অংশে বেড়ে চলেছে চাপ, অপর একটি অংশের তলায় আবার চাপা পড়েছে আরেকটি প্লেট। এই চাপ সহ্য করার মতো ক্ষমতা আর নেই প্লেটটির। যার ফলে তীব্র ভূমিকম্প এখন সময়ের অপেক্ষা। সম্প্রতি ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এই দাবি করেছেন। বেঙ্গালুরুর ‘জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ’-এ ভূকম্পবিদ সি পি রাজেন্দ্রনের নেতৃত্বে হয়েছে গবেষণা। সেখানেই দেওয়া হয়েছে মহাপ্রলয়ের পূর্বাভাস। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই দাবিকে সমর্থন করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
পশ্চিম নেপালের মোহন খোলা এবং ভারতের চোরগলিয়া, এই দু’টি অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালানো হয়েছে। ইসরো এবং গুগল আর্থের বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে এলাকার ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই বিজ্ঞানীদের মনে হয়েছে মাটির তলায় অন্তত ১৫ মিটার সরে যেতে পারে হিমালয়ান প্লেট। যার জেরে তৈরি হতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প। হিমালয়ে শেষবার এই মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল ১৩১৫ থেকে ১৪৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। তার পরে আর এত বড় ভূমিকম্প হয়নি কেন্দ্রীয় হিমালয়ে। এরপর প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর ধরে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে হিমালয়ের প্লেটে। এই চাপমুক্তির একমাত্র উপায় ভূমিকম্প। যা গোটা পৃথিবীর জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.