সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একসময় ছিলেন ভারত-বিখ্যাত বিজ্ঞানী। ইসরোয় গবেষণারত অবস্থায় ভারতে তরল জ্বালানি দিয়ে রকেট চালানোর পদ্ধতির অন্যতম প্রবর্তক ছিলেন। সেই তাঁকেই কিনা অনাবশ্যক কারণে নির্যাতন এবং মারধর করল কেরল পুলিশ। এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন ইসরোর প্রাক্তন গবেষক নাম্বি নারায়ণন। তাঁকে মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছিল এবং মানসিক নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছিলেন তিনি। বিজ্ঞানী নাম্বি নায়ারণনের এই অভিযোগের ভিত্তিতে কেরল পুলিশের বিরুদ্ধে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়ে দিল, নারায়ণনের উপর অকারণ নির্যাতন করা হয়েছিল।
২৪ বছর আগে বিদেশের চরবৃত্তির অভিযোগে নাম্বি নারায়ণনকে গ্রেপ্তার করেছিল কেরল পুলিশ। ১৯৯৪ সালে নাম্বি এবং আরেক গবেষক ডি শশিকুমারণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত গোপনীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ছিল, নাম্বি নায়ারণন ‘ফ্লাইট টেস্ট ডাটা’ কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে মালদ্বীপের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। উপগ্রহ উৎক্ষেপণের আগেই গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠতেই নাম্বির বিরুদ্ধে মামলা করে কেরল পুলিশ। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় ৫০ দিন তিনি কেরলের জেলে ছিলেন। অভিযোগ ওঠে সেসময় জেলে ওই গবেষকের উপর অহেতুক অকথ্য অত্যাচার করে কেরল পুলিশ।
এরপর মামলাটি সিবিআইয়কে হস্তান্তর করা হয়। কিছুদিন পর সিবিআই জানিয়ে দেয় নাম্বি নারায়ণনের উপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। সিবিআইয়ের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত ১৯৯৪ সালে আদালত নায়ারণনকে বেকসুর খালাস করে এবং তাঁকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই যে পুলিশকর্মীরা তাঁর উপর অত্যাচার করেছিল তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেন নায়ারণন। তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে হাই কোর্ট। হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পালটা মামলা দায়ের করেন ইসরোর প্রাক্তন গবেষক। তাঁর সেই মামলার ভিত্তিতে নতুন রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি, পুলিশ কর্তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কমিটিও তৈরি করেছে সর্বোচ্চ আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.