সুব্রত বিশ্বাস: কিছুতেই থামছে না করোনার মৃত্যুমিছিল। বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করেছে কোভিড-১৯ ভাইরাস। দাওয়াই না মেলায় বাঁচার উপায় একমাত্র ‘লকডাউন’ এবং ‘সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং’। এহেন পরিস্থিতিতে সমস্ত বিধিনিষেধকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখল বিহারের ওয়ারসিলিগঞ্জ জেলা। মাটির নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া বিষ্ণুমূর্তি দেখতে ভিড় করল জনতা।
ওয়ারসিলিগঞ্জের দু’কিলোমিটার পূর্বে চৈইনপুরা গ্রামে চাষের সময় মূর্তিটি পাওয়া যায়। লকডাউনে একাই ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করছিলেন সীতারাম সিং নামের এক চাষী। আচমকা জমিতে আটকে যায় ট্রাক্টরটির দাঁত। বার বার ধাক্কা মেরেও তা নাড়ানো যায়নি। এরপর কালো পাথরের একটা অংশ দেখতে পান চালক। সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাসীদের খবর দেন তিনি। তারপরই সামাজিক দূরত্ব অমান্য করে চলে খোঁড়াখুঁড়ি। এরপরই বেরিয়ে পড়ে চার ফুটের বিষ্ণু মূর্তি। নীচে শিলালেখটি একফুট। প্রায় একশো কিলোগ্রাম ওজনের এই মূর্তিকে গ্রামবাসীরা নিয়ে যায় স্থানীয় ঠাকুরতলায়। সেখানেই পুজোর ব্যবস্থা হয়। বিষ্ণুদেবের এক হাতে শঙ্খ, অন্য হাতগুলিতে চক্র, গদা ও একটি হাত আশীর্বাদের মুদ্রায়। করোনা আতঙ্কে দিশেহারা মানুষজন লকডাউন উপেক্ষা করে দেব দর্শনের আসায় ছুটে আসেন। পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে পূজার্চনা। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস করোনা থেকে মুক্তি দিতেই তাঁর ধরাধামে আসা।
এদিকে, কষ্টিপাথরের চার ফুটের এই মূর্তিটি গুপ্ত যুগের বলে মনে করেছেন ইতিহাসবিদরা। ঐতিহাসিক রামপ্রসাদ সিংহ রত্নাকরের কথায়, ওয়ারসিলিগঞ্জ প্রখন্ড ক্ষেত্রে মকনপুর, মহরথ, ঠেরা, অপসর এক সময় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের গড় ছিল। এই সব চত্বরে বহু প্রত্নসমগ্রী পাওয়া গিয়েছে যা গুপ্ত যুগের। এই বিষ্ণুমূর্তিও সে যুগের বলে অনুমান। তবে মূর্তিটিকে পরীক্ষা করে সেটির নির্মাণের সঠিক সময় বের করা সম্ভব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.