সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেউ চিরতরে হারিয়েছেন প্রিয়জনকে। আবার কারও বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এক-একটা দিন যেন বছরের মতো কাটছে দিল্লি হিংসায় জর্জরিতদের। আপাতত শান্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লি। অশান্তির পর কেমন কাটছে তাঁদের হোলি? সত্যি কি সেই আগের মতো রঙের উৎসবে শামিল হতে পারলেন নিঃস্বরা? হোলির সকালে যেন সেই প্রশ্নের জবাবই দিলেন হিংসা জর্জরিত মানুষগুলো।
সপ্তাহদুয়েক আগেও ভিড়ে ঠাসা থাকত উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত। দোকানপাট, কচিকাঁচাদের চিৎকারে যেন গমগম করত চতুর্দিক। কিন্তু দিল্লি হিংসা বদলে দিয়েছে সব কিছু। এখন শুধু ধ্বংসের ছবি চতুর্দিকে। কোথাও কারও আধপোড়া বাড়ি আবার কোথাও দোকান পড়ে রয়েছে। কারও চোখ প্রিয়জনের জন্য আজও জলে ভাসছে। মাঝে মধ্যেই টহল দিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। জমায়েত হলেই জানতে চাওয়া হচ্ছে কারণ। দেশের মধ্যে থেকেও যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন দিল্লি হিংসায় জর্জরিতরা।
অশান্তির পর এই প্রথম বড় অনুষ্ঠান হোলি। তাই ওই অনুষ্ঠানে আবারও সেই আগের মতো সকলে শামিল হবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সমস্ত সংশয়কে দূরে সরিয়ে রঙের উৎসবে মেতে উঠলেন হিংসা জর্জরিত অধিকাংশ বাসিন্দা। কড়া পুলিশি প্রহরায় সোমবার ‘হোলিকা দহন’ করেন অনেকেই।
শিব বিহারে রং, পিচকিরি বিক্রিবাটা হয়েছে যথেষ্টই।
মঙ্গলবার সকালে বেশ কয়েকজনকে রং দিয়ে একে অপরকে রাঙিয়ে তুলতেও দেখা গিয়েছে।
হিংসা পরবর্তী সময়ে উত্তর-পূর্ব দিল্লির দোল যেন অনেক বেশি করে সম্প্রীতির বার্তা দেয়। ধর্মের ঊর্ধ্বে মানবতা, তা প্রমাণ করেছেন হিংসা জর্জরিতরা। এদিন কোথাও হিন্দু-মুসলমানরা একে-অপরকে রঙিন করে তোলেন। আবার কেউ কেউ মিষ্টিমুখও করান।
অনেকেই বলছেন, “দিল্লি হিংসায় আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আমরা বুঝতে পেরেছি ধর্মের ঊর্ধ্বে মানবতা। তাই হোলিতে সকলে মিলে মেতে উঠেছি।” আবার কীভাবে থিতু হবেন তা বুঝতে পারছেন না দিল্লি হিংসায় জর্জরিতরা। তবে হোলির দিনের এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই যেন আবারও নতুন করে বাঁচার শক্তি জোগাচ্ছে তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.