সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার ধাক্কায় একটা সময় ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছিল দেশের আর্থিক কাঠামো। একেবারে তলানিতে নেমেছিল সরকারের আয়ের মূল উৎস জিএসটি (GST) আদায়। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন হয়ে গিয়েছিল যে, রাজ্যগুলির প্রাপ্য জিএসটির টাকা মেটানোর মতো পরিস্থিতিও ছিল না কেন্দ্রের। তবে সেসব এখন অতীত। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্রের দেওয়া আর্থিক প্যাকেজ কাজে লেগেছে। কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। আর তারই ফলশ্রুতি লাগাতার জিএসটি আদায়ে বৃদ্ধি।
গত মাস তিনেক ধরেই জিএসটি আদায়ের পরিমাণ বাড়ছিল। তবে, ডিসেম্বর মাসে তা সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলল। ডিসেম্বরে দেশে প্রত্যক্ষ পণ্য এবং পরিষেবা কর বাবদ সরকারি কোষাগারে ঢুকেছে ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা। যা জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ। করোনা মহামারীর আগেও কোনও মাসে এই বিপুল অঙ্কের কর আদায় করতে পারেনি সরকার। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এই কর আদায়ের অঙ্কটা ছিল এবারের ডিসেম্বরের ১২ শতাংশ কম। এর আগে সর্বোচ্চ জিএসটি আদায় হয়েছিল ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে। সেবার প্রত্যক্ষ কর বাবদ কেন্দ্রীয় কোষাগারে ঢুকেছিল প্রায় ১ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকা। সাধারণত এপ্রিল মাসে কর আদায়ের পরিমাণ বেশিই থাকে। মার্চে বছর শেষে অনেকেই বকেয়া কর মিটিয়ে দেন, যা এপ্রিলের হিসেবে যোগ হয়। এবছর এপ্রিলেও রেকর্ড জিএসটি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে অর্থমন্ত্রক (Ministry of Finance)।
ডিসেম্বরের রেকর্ড অঙ্কের জিএসটি সরকারের কাছে সঞ্জীবনীর কাজ করতে চলেছে। কারণ, গতকালই কেন্দ্রের রাজস্ব ঘাটতির একটি হিসেব প্রকাশ্যে এসেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে নভেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকায়। যা কেন্দ্রের গোটা বছরের বাজেট প্রত্যাশার তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি। এর মূল কারণই হল লকডাউনে (Lock Down) জিএসটি আদায় কম হওয়া। সেই সঙ্গে অবশ্য কেন্দ্রের আর্থিক প্যাকেজের প্রভাবও রয়েছে। আর্থিক প্যাকেজ দিতে গিয়ে কোষাগারে রীতিমতো স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। ডিসেম্বরের রেকর্ড আয়ে সেই বিপুল ঘাটতির ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেওয়া যাবে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.