বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, রাজকোট: দুই যুব নেতা। দুই আন্দোলনের ‘প্রতীক’। হার্দিক প্যাটেল (Hardik Patel) ও জিগ্নেশ মেবানি। প্রথমজন গুজরাটের (Gujarat) পাতিদার আন্দোলনের নেতা। দ্বিতীয়জন দলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের ‘ত্রাতা’। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গোটা দেশে পরিচিত হয়েছিলেন এই দু’জন। গত নির্বাচনে দু’জনই নির্দল প্রার্থী হয়ে গুজরাট বিধানসভায় প্রথম পা রাখেন। তারপর কংগ্রেসে (Congress) যোগ। হার্দিক কংগ্রেস ছাড়লেও জিগ্নেশ হাত প্রতীকে ভোট ময়দানে। আর হার্দিক হাত ছেড়ে পদ্ম শিবিরের প্রার্থী। গত ভোটে দুজনেই সহজ জয় পেলেও এবার চরম সমস্যায় এই দুই যুব নেতা। ভোটে জেতা নিয়ে সংশয় উভয়েই। সমস্যা অবশ্য ভিন্ন। হার্দিকের সমস্যা শিবির বদল। আর জিগ্নেশের দলছুট হয়ে পড়া।
১৭ সালের ভোটে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে রাজ্যের আইনসভায় পা রাখেন হার্দিক। পরে রাহুল গান্ধীর হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ দিলেও হার্দিকের মতো শিবির বদল করেননি। এবারও প্রার্থী হয়েছেন বরগম কেন্দ্র থেকে। আর হার্দিকের কেন্দ্র বদল করে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করেছে ভিরামগাঁও থেকে।
কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে এই দুই যুবনেতা যতটা সহজে জয় পেয়েছিলেন। এবার ততটা সহজ হবে না বলে মনে করছে গুজরাটের রাজনৈতিক মহল। তাঁকে তলায় তলায় রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের বিরোধিতার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে লড়াই কঠিন বলে মানতে নারাজ হার্দিক প্যাটেল। ফোনে তিনি জানান, ”এই আসনে ভোটারদের সংখ্যাগরিষ্ঠ পাতিদার। তারা আমার আন্দোলনের কথা জানেন। আমার নেতৃত্বে তৈরি হওয়া আন্দোলনের ফলেই আজ সরকার পাতিদারদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দিতে বাধ্য হয়েছে।” আর গোষ্ঠী কোন্দলের কথা মানতে চাননি তিনি। জানান,” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) আশীর্বাদ আমার মাথার উপর রয়েছে। সবাই এই সত্যটা জানে। তাই আমি হেরে যেতে পারি এমন কোনও কাজ নেতাকর্মীরা করবেন না।”
আবার ভিন্ন সমস্যায় জিগ্নেশ মেবানি। গত ভোটের লড়াইয়ের সেনাপতিরা বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন। প্রধান সেনাপতি ছিলেন তৎকালীন জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা কানাইয়া কুমার। কার্যত জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জিগ্নেশকে বিধানসভায় পাঠায়। এখন কানাইয়া রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ভারত জোড়ো যাত্রায় ব্যস্ত। বাকি সঙ্গী সাথীরাও দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে গিয়েছেন। তাই স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীদের ওপরে এবার ভরসা করতে হচ্ছে, দলিত আন্দোলনের এই কংগ্রেস নেতাকে। প্রচারে এখনও সোনিয়া রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দূরঅস্ত, ভোটের ময়দানে অনেক অনভিজ্ঞ নেতাকর্মীকে নিয়ে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। তবে তিনি জানান, ”আমার জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই। তবে লড়াই আগেরবারের থেকে একটু হলেও কঠিন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.