সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছ’মাস আগে বাবা-মার মৃত্যু হয়েছে। চার ভাইবোনের সংসারে চূড়ান্ত অভাব। আর সম্ভবত সেই অভাব থেকে মুক্তি পেতেই ‘আত্মহত্যা’র পথ বেছে নিলেন তাঁরা। হরিয়ানার ফরিদাবাদের সুরজকুন্দ এলাকার একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় চারজনের ঝুলন্ত দেহ।
সুরজকুন্দ থানার পুলিশ ইনস্পেকটর বিশাল কুমার জানিয়েছেন, বেশ কয়েকদিন ওই চার ভাইবোনকে বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। রবিবার সকালে বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরোলে কেয়ারটেকার পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটের দু’টি ঘর থেকে চারজনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতের নাম মীনা ম্যাথু্ (৫২), নীনা (৫১), জয়া (৪৯) ও প্রদীপ (৩৭)। পুলিশকে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বাবা মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেলেন চারজন। দেহগুলির পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই সুইসাইড নোটটি ১৮ অক্টোবর লেখা হয়েছিল৷ সুইসাইড নোটটিতে চার ভাইবোনের সই করা ছিল৷ বাবা-মা মারা যাওয়ার পর কীভাবে তাঁদের সংসার চলত, তারও উল্লেখ রয়েছে সুইসাইড নোটে৷ তদন্তকারীরা জানান, সুইসাইড নোটের একটি ছত্রে লেখা রয়েছে ‘বাবা-মাকে ছাড়া আমরা বাঁচার কথা ভাবতেই পারিনা৷’ এই লেখা দেখেই পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদেই ভুগছিলেন চার ভাইবোন৷ তাই আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা৷
এছাড়াও ওই সুইসাইড নোটে চার ভাইবোন লিখেছেন, রাজহংস নামে একটি হোটেল কর্তৃপক্ষের থেকে তাঁদের মা প্রায় এক লক্ষ টাকা পেতেন৷ কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকা মিটিয়েছে৷ ১১ অক্টোবর আরও দশ হাজার টাকা শোধ করে হোটেল কর্তৃপক্ষ৷ বাকি ৩০ হাজার টাকা এখনও শোধ করেনি তারা৷ স্বাভাবিকভাবেই চরম অনটনের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে বলেও সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেন আত্মঘাতী চার ভাইবোন৷ আর্থিক লেনদেনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজহংস হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার হরবিন্দর যাদব৷ তবে টাকা ধার থাকার কথা খারিজ করে দিয়েছেন তিনি৷
এই চার ভাইবোনের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, বাসনপত্র স্থানীয় চার্চে জমা দিয়ে দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন সুইসাইড নোটে৷ এছাড়াও বুরারি শ্মশানে শেষকৃত্য করারও ইচ্ছার কথা উল্লেখ করেছেন চারজনে৷ ‘আত্মঘাতী’-দের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী স্থানীয় একটি চার্চের তৎপরতায় ময়নাতদন্তের পর ওই শ্মশানেই শেষকৃত্য করা হবে তাঁদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.