সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘরের মেয়েটা যে আর ঘরে ফিরবে না তা যেন এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না ওঁদের। কুরে কুরে খাচ্ছে ১৯ বছরের মেয়ের করুণ পরিণতির যন্ত্রণা। গোটা বাড়ি জুড়েই সেই দুঃস্মৃতির কালো ছায়া। অথচ নিভৃতে বসে স্মৃতিচারণ করারও উপায় নেই। বাড়িময় ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশ। এই অবস্থায় শনিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে আবেগ আর সামলাতে পারলেন না নির্যাতিতার দাদা। হাহাকারে ভরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, ‘‘বলতে পারেন সেদিন রাতে কার দেহ দাহ করা হয়েছিল? আমরা জানতে চাই, ওটা যদি আমাদের বোনেরই দেহ হয়, তাহলে কেন ওইভাবে তা দাহ করা হল?’’ প্রসঙ্গত, গত দু’দিনের লাগাতার চেষ্টার পরে অবশেষে শনিবার হাথরাসের নির্যাতিতার বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পেয়েছে সংবাদমাধ্যম। আর সংবাদমাধ্যমকে সামনে পেয়ে তাদের কাছে এমন ভাবেই অভিমান প্রকাশ করল নির্যাতিতার পরিবার।
এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে নির্যাতিতার পরিবার জানতে চায়, বারবার পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করা সত্ত্বেও বাড়ির মেয়েকে একবার শেষ দেখা দেখতে দেওয়া হয়নি তাদের। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে নির্যাতিতার দাদা জানিয়েছেন, ‘‘আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টও দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা বলল, তোমরা বুঝবে না। তোমরা তো ইংরেজি পড়তে পারো না।’’ নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, গত দু’দিন পরিবারের কাউকেই বাড়ির বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। বাড়িতে সর্বক্ষণই রয়েছে পুলিশ প্রহরা। সব মিলিয়ে তাঁরা অতিষ্ঠ হয়ে রয়েছেন প্রশাসনের আচরণে।
নির্যাতিতার দাদা জানাচ্ছেন, ‘‘আমাদের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না দু’দিন ধরে। আমরা ভয়ে ভয়ে রয়েছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আমরা পুলিশকর্মীদের বারবার বলেছি আমাদের একটু আলাদা থাকতে দেওয়া হোক। কিন্তু ওঁরা সারাক্ষণ বাড়ির মধ্যে রয়েছেন। প্রশাসনিক অফিসাররা মাঝেমধ্যেই এসে আমাদের ফোন দেখতে চাইছেন।’’ পরিবারের আর এক সদস্যের দাবি, ‘‘আমাদের বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছিল গ্রাম অধিকারীর সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা মিটমাট করে নিতে। কিন্তু আমরা ন্যায় চাই।’’
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশ সরকার নির্যাতিতার পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, একটি বাড়ি ও পরিবারের কোনও একজন সদস্যের জন্য চাকরির প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু পরিবারের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের ওসব দরকার নেই। বরং মামলাটি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে হোক। পুরো বিষয়টি খতিয়ে তদন্ত করুক সিট। গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরাস জেলার ওই দলিত তরুণী ধর্ষণ এবং নৃশংসতার শিকার হন। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় চার অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে, এদিনই নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.