সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যোগ দিয়েছিলেন নেতাজির আইএনএতে। রানি ঝাঁসি রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটন্যান্টের দায়িত্ব সামলেছেন। বন্দুক, মেশিনগান চালাতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ৯১ বছরের রমা খান্ডওয়াল রণাঙ্গনের মতো পর্যটন ক্ষেত্রেও নিঁখুত। গত ৫০ বছর ধরে তাঁর ধারাবাহিকতার স্বীকৃতি মিলল। নবতিপর রমাদেবীকে দেশের সেরা টুইস্ট গাইড হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে সম্মানিত করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
[মন্দিরে গুলি চালিয়ে অস্ত্র পূজা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের]
গত পাঁচ দশক ধরে তিনি মুম্বইয়ের সবথেকে প্রবীণ গাইড। বছর পাঁচেক আগেও তিনি দিব্যি এলিফ্যান্টার ১২০টি সিঁড়ি পেরিয়েছেন। জীবন সায়াহ্নে এসে এমন পুরস্কারে উছ্বাস থামছে না রমা খান্ডওয়ালার। তাঁর কথায়, গাইডরা দেশের তথাকথিত বেসরকারি অ্যাম্বাসাডর। তারা দেশের কথা অন্যদের কাছে তুলে ধরেন। ট্যুরিস্ট গাইডের কাজ এখন খানিকটা কমিয়ে দিলেও রমাদেবী নতুন গাইড তৈরিতে ব্যস্ত। নব প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ধর্ম, রুচি সম্বন্ধে পরিচিত করাচ্ছেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানে থাকার জন্য তিনি জাপানি ভাষায় পটু। বৌদ্ধধর্ম নিয়েও রমাদেবীর প্রচণ্ড আগ্রহ। সেই উৎসাহে একবার দলাই লামা এবং ভুটানের রাজার সঙ্গেও তিনি দেখা করে এসেছেন। সেই সুবাদে বৌদ্ধ স্থাপত্য এলিফ্যান্টায় তাঁর ডাক পড়ে। আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চোখের সামনে কয়েকশো জাপানির মৃত্যু মানতে পারেননি রমা খান্ডওয়ালা। তারপর থেকে বৌদ্ধ ধর্ম বা অহিংসার প্রতি তাঁর এমন দুর্বলতা।
[দেশপ্রেম শেখাবেন না, বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ উদ্ধব ঠাকরের]
দেশের এই প্রবীণ গাইডের মা লীলাবতী মেহতা ছিলেন রানি ঝাঁসি রেজিমেন্টের অন্যতম রিক্রুটার। মেয়েকে বাহিনীতে নিয়ে যান লীলাবতীদেবী। সেখানেই তাঁর অস্ত্র প্রশিক্ষণ। জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠা। সেই কারণে আজও তাঁর পোশাকের হাতায় লেখা থাকে নেতাজির নাম। তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। এই স্লোগান শুনলে এখনও তাঁর অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ হয়। ১৯৪৫ সালের মে মাসে জাপান এবং নেতাজির আইএনএ ব্রিটিশদের কাছে আত্মসমপর্ণ করেছিল। এরপর ৬ মাস গৃহবন্দি থাকার পর বম্বে ফিরেছিলেন রমা। ভারতে ফেরার পর তাঁর জীবন নতুন পথে এগোতে থাকে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকার অভিজ্ঞতায় বেছে নেন ট্যুরিস্টের পেশা। নবতিপর মনে করেন, এই জগৎ উপভোগ্য এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। যেখানে শেখার শেষ নেই। কত ধরনের মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ মেলে। নতুনদের সঙ্গে মেশার ইচ্ছে থেকে ৯১ বছরেও সপ্তাহে দু-তিন বার বেরোন এই যোদ্ধা। এই বয়সে কীভাবে এত এনার্জি পান। রমা খান্ডওয়াল অস্ফুটে বলে উঠেন, নেতাজির মন্ত্র তাঁকে এই শক্তি দিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.