সোমনাথ রায়, রেহারি: যেন ধ্বংসস্তূপ! ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাচ, ইটের টুকরো। ভেঙে পড়েছে বাড়ির দেওয়াল। ছিঁড়ে পড়ে রয়েছে বৈদ্যুতিক তার। বাসিন্দাদের চোখে-মুখে আতঙ্ক। যদিও পাকিস্তানকে ‘সবক’ শেখানোর পক্ষেই সাধারণ মানুষ। তবে শনিবার বিকেলে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছে দু’দেশ। ১২ তারিখ পর্যন্ত তা মেনে চলা হবে। আপাতত উপত্যকা জুড়ে পড়ে রয়েছে সংঘর্ষের চিহ্ন।
শনিবার সকালে কাশ্মীরের রেহারি এলাকায় পাকিস্তানের ছোড়া ড্রোন এসে পড়েছিল। বড়সড় কোনও ক্ষতি হয়নি। ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম তা নষ্ট করে দিয়েছে। কিন্তু ড্রোনের আঘাতে কিছু কিছু ক্ষতি অবশ্যই হয়েছে। একটা দোতলা বাড়ির একাংশ কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পাঁচিল ভেঙে পড়ে গুঁড়িয়ে গিয়েছে একটি গাড়ি। প্রাণ হাতে করে কোনওমতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন বলে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন ওই বাড়ির মালিক। তাঁর চোখেমুখে এখনও আতঙ্কের রেশ। কথা বলার সময় সেটা স্পষ্ট দেখতে পেলাম।
ওই বাড়ির এক সদস্যের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তাঁর কথাতেও আতঙ্কের রেশ, “সময়টা সাড়ে ৬টা হবে। ঘুমিয়েই ছিলাম। হঠাৎ কান ফাটানো শব্দ! সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। তারপরই এই অবস্থা। পুরো ঘর তছনছ হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে বাচ্চারা রয়েছে। সবাই আতঙ্কে আছি।” আরও একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙেছে একাংশ। সেই বাড়ির সদস্য বলছেন, “আমরা বাড়িতে সুরক্ষিত নই। কোথায় যাব। ভারত চরম প্রত্যাঘাত করুক।” যদিও সংঘর্ষবিরতির খবর নিশ্চয়ই তাঁদের স্বস্তি ফেরাবে।
শনিবার একই সময় জম্মুর একটি মন্দিরেও ড্রোন এসে পড়ে। একটি বাড়ি অর্ধেক ভেঙে গিয়েছে। বেরিয়ে রয়েছে লোহার রডগুলি। সেখানকার বাসিন্দারা ফুঁসছেন ক্ষোভে। তাঁরা বলছেন, “পাকিস্তান বেছে বেছে সাধারণ মানুষদের আক্রমণ করছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়ুক। সেই ক্ষমতা নেই ওদের। আমরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে আছি। প্রয়োজনে যুদ্ধে যেতে রাজি।”
শনিবার বিদেশমন্ত্রক ও সেনার তরফে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।তবুও সেনা সব সময় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে। সাংবাদিক বৈঠক করে ইসলামাবাদের মিথ্যাচারের জবাবও দিয়েছে। তবে সংঘর্ষ থামলেও উপত্যকার বিভিন্ন অংশ রয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের বর্বরতার চিহ্ন। এবার সেসব ভুলে স্বাভাবিক জীবনেই ফিরতে চাইবেন এখানকার বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.