সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত। ক্ষেপণাস্ত্রটি স্বল্প পাল্লার এবং সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। ৩৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভূমি থেকে ভূমিতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম এই মিসাইল। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওড়িশার উপকূলবর্তী চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জের (আইটিআর) তিন নম্বর লঞ্চ কমপ্লেক্সের একটি মোবাইল লঞ্চার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ক্ষেপণাস্ত্রটি। উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞানীরা। সফল পরীক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
[পৃথ্বী-২ ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত]
প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এদিনের উৎক্ষেপণ চূড়ান্ত সফল হয়েছে। নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে পৃথ্বী-২। ৫০০ থেকে ১ হাজার কিলোগ্রাম বিস্ফোরক বহনে সক্ষম এই স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট এই মিসাইলটি তরল জ্বালানির মাধ্যমে চালিকাশক্তি পায়। এর আগে, পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম অগ্নি-১ (পাল্লা ৭০০ কিলোমিটার) এবং তার আগে গত ১৮ জানুয়ারি অগ্নি-৫ (পাল্লা ৫৮০০ কিলোমিটার) ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের উৎক্ষেপণ নিয়মিত পরীক্ষার অঙ্গ ছিল। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রকে। অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্তপারে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ শহর ও জনপদগুলির উপর লক্ষ্য রেখেই এই ক্ষেপণাস্ত্র বানানো হয়েছে। কারণ ভারত পাকিস্তানের আগ্রাসী পরমাণু কর্মসূচির পালটা জবাব হিসাবে কয়েক বছর আগে ‘কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন’ নামে সামরিক কৌশল নিয়েছে।
ভারতের কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন নীতিতে আতঙ্কিত হয়ে পাকিস্তান পাল্টা স্বল্প পাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি উন্নয়নে জোর দেয়। এজন্য দিল্লি, অমৃতসর, জয়পুর, লুধিয়ানা, চণ্ডীগড়ের মতো পাকিস্তানের সীমান্তের কাছে থাকা উত্তর ভারতের শহরগুলিতে হামলার জন্য স্বল্প পাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে জোর দেয় তারা। নাসর, বাবর-সহ একাধিক পরমাণু অস্ত্রবাহী স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বানিয়ে সেগুলি পাক সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। ফলে ভারতের ওই শহরগুলিতে যে কোনও সময় পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম হয়ে যায় ইসলামাবাদ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কাছে জরুরি হয়ে ওঠে নিজেদের হাতে থাকা স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মারণক্ষমতা এবং পরমাণু অস্ত্র বহন (পে লোড) ক্ষমতা বাড়ানো। অগ্নি-৫ এর মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে নয়াদিল্লির হাতে। কিন্তু সীমান্তপারের পাকিস্তানি শহরগুলিকে নিখুঁতভাবে ভারতীয় পরমাণু হামলার নিশানায় আনতে গেলে দরকার ছিল স্বল্পপাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের। এবার সেই অভাব পূরণ করল পৃথ্বী-২।
[‘পাকিস্তানকে জবাব না দিয়ে ভারতের মিসাইল কি শুধু রাজপথে প্রদর্শনের জন্য?’]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.