সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সীমান্তে নিশ্বাস ফেলছে ‘ড্রাগন’। চারিদিক ঘিরে ফেলছে যুদ্ধের গাঢ় মেঘ। এহেন পরিস্থিতিতে যে কোনও হামলা রুখে দিতে ফৌজ কতটা প্রস্তুত, তা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার দু’দিনের সফরে লাদাখ পৌঁছলেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে।
এদিন সকালে লেহ্তে পৌঁছন সেনাপ্রধান নারাভানে। পূর্ব লাদাখে ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘর্ষের অন্যতম কেন্দ্র প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত তিনটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। সেখানেই ফিল্ড কমান্ডারদের থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন। প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহের মধ্যে দু-দুবার ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিনা হানাদার বাহিনী। প্রথমে ২৯ ও ৩০ আগস্টের মাঝ রাতে, লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণে ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে লালফৌজ। একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান বদলে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করতে এগিয়ে আসে প্রায় ২০০ চিনা সৈনিকের একটি দল। তবে এবার প্রস্তুত ছিল ভারতীয় বাহিনী। আগ্রাসন প্রতিহত করে এতদিন পর্যন্ত ফাকা পড়ে থাকা প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে পাহাড়ি অঞ্চলগুলির দখল নিয়ে নেয় ভারতীয় সেনা। বেগতিক দেখে পিছিয়ে যায় লালফৌজ। যদিও চিনের দাবি, তারা সীমান্তে কোনও রকম আগ্রাসন দেখায়নি। উলটে ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধেই সীমান্ত পার হয়ে উত্তেজনা ছড়াবার অভিযোগ তুলেছে।
এদিকে, সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আজও পূর্ব লাদাখের চুশুলে ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে ব্রিগেডিয়ার স্তরে বৈঠক চলছে। কিন্তু এবারের বৈঠক প্রথামাফিক নির্দিষ্ট ‘Border meeting point’-এ নির্মিত তাঁবুতে না হয়ে খোলা জায়গায় হচ্ছে। এতেই স্পষ্ট যে আলোচনা চালালালেও লালফৌজের উপর মোটেও আস্থা রাখছে না ভারত। প্যাংগং পরিস্থিতি পর্যালোচানার জন্য মঙ্গলবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং সেনাপ্রধান এম এম নারাভানে বৈঠকে হাজির ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৈঠকের পরও প্যাংগং লেক ও ফিঙ্গার এলাকাগুলি থেকে পিছু হটতে রাজি হয়নি চিনারা। বরং পূর্ব লাদাখের গালওয়ান, গোগরা, হট স্প্রিং, দেপসাং সমতলভূমি, প্যাংগং হ্রদ ও পাহাড়ির খাঁজ বা ফিঙ্গার পয়েন্টগুলোতে চিনের বাহিনীকে ঘাঁটি গেড়ে থাকতে দেখা যায়। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্যাংগং লেকের দক্ষিণের অংশ এখন ভারতীয় সেনার নজরদারিতে রয়েছে। চিনের বাহিনী তাদের সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.