Advertisement
Advertisement
India-Pakistan Ceasefire

ভারতের নিশানায় ছিল পাক পরমাণু ঘাঁটি! মার্কিন উদ্বেগে তড়িঘড়ি মাথা নত করে পাকিস্তান

প্রকাশ্যে এল পর্দার ওপারের গোপন তথ্য।

Inside story of how India-Pakistan reached Ceasefire Agreement
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:May 11, 2025 3:33 pm
  • Updated:May 11, 2025 10:18 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুদিন আগেই আমেরিকার উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স বার্তা দিয়েছিলেন, ভারত-পাকিস্তান (India-Pakistan) যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না আমেরিকা। এরপর দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা শুরু হলে সেই আমেরিকার হস্তক্ষেপ, সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বার্তা ও দুই দেশের সংঘর্ষবিরতি (Ceasefire) ধোঁয়াশা তৈরি করেছে। কেন ভারত-পাক যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করল আমেরিকা? কেনই বা ভারতকে ফোন করে সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব দিল পাকিস্তান? ভারতের কাছে শাহবাজের মাথা নত করার নেপথ্যে পর্দার ওপারের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। জানা যাচ্ছে, ভারতের পরবর্তী নিশানা ছিল পাকিস্তানের পরমাণু ঘাঁটি।

ভারতের বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পাকিস্তান। তবে গত তিনদিন ধরে ভারত হামলার চেয়ে ঢালই ব্যবহার করেছে বেশী। চতুর্থ দিনে ধৈর্যচ্যুতি ঘটে ভারতের। ৯ মে ভোররাত থেকে ১০ মে সকাল পর্যন্ত পাক বিমানঘাঁটিগুলি নিশানা করে ভারত। ব্রহ্মোস মিসাইলের হামলায় রাওয়ালপিন্ডির কাছে চাকলালা এবং পাঞ্জাব প্রদেশের সারগোধা বিমানঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়। এরপর জ্যাকোবাবাদ, ভোলারি এবং স্কার্দুতেও চলে হামলা। ভারত আক্রমণাত্মক রূপ নিতেই পাকিস্তান হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারে এতদিন ধরে যে পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছিল, ভারত পাকিস্তানের সেই পরমাণুকেন্দ্রকে নিশানা করতে চলেছে। পাকিস্তানের পারমাণবিক কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ কাঠামো আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি যে ভয়াবহ আকার নেবে তা বুঝতে পেরেই যুদ্ধ থামাতে তৎপর হয় পাকিস্তান। আমেরিকার কাছে আর্জি জানায় মধ্যস্থতার। সংঘাত থামাতে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে হয় আমেরিকাকে।

Advertisement

সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, পরমাণু কেন্দ্রে হামলার আশঙ্কা থেকেই আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে পাকিস্তান। পাক সরকারের তরফে জানানো হয়, ভারত যদি পাকিস্তানের পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় তবে পরমাণু সংক্রান্ত গোপন তথ্য জঙ্গিদের হাতে চলে যেতে পারে। যা বিশ্বের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আমেরিকা এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করলে বিশ্বের জন্য সমূহ বিপদ। গুরুতর এই অবস্থায় নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দেয় আমেরিকা। নির্দেশ দেওয়া হয়, হটলাইন ব্যবহার করে ভারতকে যেন যুদ্ধ থামানোর অনুরোধ করে তারা। আমেরিকার নির্দেশের পর পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাসিফ আবদুল্লা ভারতের ল্যাফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইকে ফোন করেন ভারতীয় সময় অনুযায়ী ৩টে ৩৫ নাগাদ। আসে সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব। যা পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি।

তবে এই সংঘর্ষবিরতির ঘোষণায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যুদ্ধক্ষেত্রে ভারত যেখানে কৌশলগতভাবে ভালো অবস্থানে ছিল, সেখানে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে মেনে নেওয়া কী সঠিক পদক্ষেপ হল? এখানে অবশ্যই ৭ মে ভারতের বিবৃতি মাথায় রাখা প্রয়োজন। পাকিস্তানের ৯ জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, এই প্রত‍্যাঘাত ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ‍্যনির্ভর, পরিমিত এবং অ-প্ররোচনামূলক’। ভারত যে পাকিস্তানের কোনও সামরিক পরিকাঠামো লক্ষ‍্য করে আঘাত হানেনি। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যদি উত্তেজনা বৃদ্ধি না-করে, তা হলে ভারতও আর কোনও পদক্ষেপ করবে না। অর্থাৎ পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার কোনও উদ্দেশ্য ভারতের ছিল না। যদিও ভারতের কাছে সুযোগ ছিল পাকিস্তানের হামলার পর যুদ্ধের সুফল নিয়ে পাকিস্তানের অন্যান্য জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানোর। ৭ মে হামলার আগে সরকারকে পাকিস্তানের ২৫টি জঙ্গি ঘাঁটির ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল ‘র’-এর তরফে। কিংবা কাশ্মীরে পাক জঙ্গি অনুপ্রবেশের অন্যতম রুট হাজি পীর পাশের দখল নেওয়ার। যেভাবে ইজরায়েল দখল করেছিল গোলান ঘাঁটি। যদিও শেষপর্যন্ত নিজেদের ঘোষিত অবস্থানের একচুলও নড়চড় করেনি ভারত। যা অবস্থানগতভাবে সঠিক পদক্ষেপ হলেও নীতিগত এই অবস্থান প্রশ্ন তুলছে দেশের অন্দরে।

তবে যুদ্ধবিরতি হলেও কোনওরকম কূটনৈতিক বা সামরিক আলোচনায় ভারত যে অংশ নেবে না তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি। যে কোনওরকম উস্কানির পালটা জবাব দেবে ভারত। পাশাপাশি এটাও জানানো হয়েছে, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর সিন্ধু জলচুক্তির উপর যে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল তা এই যুদ্ধবিরতিতে প্রভাবিত হবে না। যার অর্থ পাকিস্তানের উপর জল ধর্মঘট জারি থাকবে। আগামী ১২ মে দুপুর ১২টায় বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত ও পাকিস্তানের ডিজিএমও। সেই বৈঠকের আগেই ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এরপর যদি ভারতে কোনও জঙ্গি হামলা হয় তাহলে তা যুদ্ধ ঘোষণার সামিল হিসেবে ধরা হবে। যার শাস্তি আরও কঠোর হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement