ছবি: ফাইল
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দোষ বামপন্থী সমর্থিত আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদেরই। তাদের নিজেদের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এমন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গিয়েছে। জেএনইউ-তে প্রায় নজিরবিহীনভাবে মুখ ঢাকা ‘বহিরাগত’দের তাণ্ডবের পর কেন্দ্রের চাপে পড়ে পড়ুয়াদেরই দায়ী করছে কর্তৃপক্ষ। রেজিস্ট্রারের বক্তব্য, হস্টেল ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে পড়ুয়াদের একাংশ সেমিস্টার বয়কট করেছে। রেজিস্ট্রেশন করাতে অন্যদেরও বাধা দিয়েছে। এসবের ফল শনি ও রবিবারের অশান্ত পরিস্থিতি। সোমবার লিখিত বিবৃতিতে নাম না করে একথা উল্লেখ করলেন রেজিস্ট্রার। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন করে বিতর্ক।
রবিবার সন্ধেবেলা জেএনইউ ক্যাম্পাসে ঢুকে অন্তত তিনটি গার্লস হস্টেলে হামলা চালায় মুখ ঢাকা ‘বহিরাগত’র দল। অভিযোগ, হস্টেল থেকেই ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষকে টানতে টানতে বাইরে বের করে দেওয়ালে মাথা ঠুকে ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ব্যাট, লাঠির ঘায়ে আহত অধ্যাপিকা সুচরিতা সেন-সহ অন্তত ১৮ জন। যাঁদের প্রত্যেককেই এইমসে ভরতি করানো হয় চিকিৎসার জন্য। এমন হামলার নেপথ্যে যখন বারবার অভিযোগের তির এবিভিপির দিকে, ঠিক সেইসময় রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমারের বিবৃতি সম্পূর্ণ উলটো। তাঁর অভিযোগ, এতদিন ধরে হস্টেল ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলন করেছে একদল পড়ুয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় থাকা বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের মদতই ছিল সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘদিন ধরে পড়াশোনা বাদ দিয়ে প্রতিবাদে শামিল হওয়া শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছে। যারা মন দিয়ে পড়াশোনা করতে চায়, তাদেরও বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রেজিস্ট্রারের। তিনি আরও অভিযোগ করেন, শনিবার সেমিস্টারের রেজিস্ট্রেশনে অন্যান্য পড়ুয়াদেরও বাধা দেওয়া হয়েছে বামপন্থী ছাত্রছাত্রীদের তরফে। এর পালটা প্রতিরোধও হয়েছে। যার বহিঃপ্রকাশ শনি ও রবিবার হস্টেলে হামলা।
হস্টেলে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে বেশ কয়েকমাস ধরেই জেএনইউ-তে চলছে আন্দোলন। সেমিস্টারও বয়কটের ডাক দিয়েছে প্রতিবাদীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষও পালটা জানিয়ে দেয়, সেমিস্টারে না বসলে ফের সুযোগ দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে ইমেল বা হোয়াটসঅ্যাপেও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু তাতেও রাজি হননি কেউ পরীক্ষায় বসতে। শনিবার ছিল সেমিস্টারের রেজিস্ট্রেশন করানোর দিন। ওইদিন যাঁরা রেজিস্ট্রেশন করিয়ে পরীক্ষা দিতে চান, তাঁদের চাপ দিয়ে সেমিস্টার বয়কটে রাজি করানো হয়। এসএফআই সমর্থিত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলছেন রেজিস্ট্রার। এমনকী মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর এসএফআইয়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটে বলে তাঁর দাবি।
রবিবার রাতের দিকেও এবিভিপি অভিযোগ তুলেছিল, আগে তাদের উপর হামলা হয়েছে। এখন রেজিস্ট্রারের বিবৃতি সেই অভিযোগকেই যেন সিলমোহর দিল। এদিকে, দিল্লি পুলিশ রবিবারের তাণ্ডবের ঘটনায় এফআইআর দায়ের করেছে। যদিও এখনও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের প্রতি আস্থা কমছে এসএফআইয়ের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.