সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পূর্বঘোষণা মতোই আজ শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই সংসদ ভবন অভিযানে নামল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ। আর পুলিশি বাধার মুখে পড়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন পড়ুয়ারা। আটক করা হল বেশ কয়েকজনকে। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জারি ১৪৪ ধারা। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সংসদ ভবনের সামনে।
জেএনইউ-তে সম্প্রতি হস্টেল ফি বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। এর বিরোধিতায় নেমে ছাত্র সংসদ আগেই দাবি তুলেছিল, এই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। তা নইলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত ছাত্র সংসদ। প্রবল আন্দোলনের মুখে পড়ে আংশিকভাবে প্রত্যাহার করা হয় বাড়তি ফি। শুধুমাত্র বিপিএল পড়ুয়াদের বাড়তি ফি দিতে হবে না বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা মানতে নারাজ অন্যান্য পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে তিন সদস্যের এক উচ্চপর্যায়ের কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। কমিটির সদস্য প্রাক্তন ইউজিসি চেয়ারম্যান ভিএস চৌহান, এআইসিটিই-র চেয়ারম্যান অনিল সহস্রবুদ্ধে এবং ইউজিসি সচিব রজনীশ জৈন। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব আর সুব্রহ্মণ্যম জানিয়েছিলেন, ফি বৃদ্ধি প্রতিবাদে জেএনইউতে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে এই কমিটি। তাঁদের সমস্ত দাবি, প্রস্তাব শুনে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে হাঁটা হবে।
কিন্তু কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে সেভাবে সাড়া দিতে রাজি হয়নি জেএনইউ ছাত্র সংসদ। গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বয়কট করে প্রতিবাদ আন্দোলনের সূচনা করেন তাঁরা। আর বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁরা সোমবার সংসদ ভবন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। রীতিমতো পোস্টার ছাপিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আবেদন জানানো হয়। ‘লং মার্চ টু পার্লামেন্ট’ শীর্ষক পোস্টারের মূল কথা ছিল, শিক্ষায় সকলের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আজকের দিন বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, প্রতিবাদ মিছিলের এই ঢেউ যাতে সংসদের অধিবেশন পর্যন্ত পৌঁছে যায়, সেটাই লক্ষ্য। যাতে জনপ্রতিনিধিরা পড়ুয়াদের পক্ষে সওয়াল করেন সংসদের অধিবেশনে।
সেইমতো আজ সকাল ১০টা নাগাদ সরবমতী ধাবায় জমায়েত হন বামপন্থী ছাত্র সংসদের সদস্যরা। পাশাপাশি এতে অংশ নেন সাধারণ ছাত্রছাত্রীরাও। জমায়েত দেখেই ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। মোতায়েন করা হয় বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনীও। সংসদ ভবনের চারপাশে তৈরি হয় ব্যারিকেড। মিছিল একটু এগোতেই পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চায় মিছিল। শুরু হয় সংঘর্ষ। বেশ কয়েকজন পড়ুয়াদের আটক করে পুলিশ। সংসদ ভবন চত্বরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। তা স্বাভাবিক করতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে। পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছেন ছাত্র সংসদের সভাপতি এন সাই বালাজি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.