সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাতীয় মহিলা কমিশনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখল কেরলের খ্রিস্টান যাজকরা। চার্চে ধর্মযাজকদের কাছে স্বীকারোক্তির বিষয়টি তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিল কমিশন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রীকে এই চিঠি লেখা হয়।
কেরলের যাজকদের মতে মহিলা কমিশন যে প্রস্তাবটি দিয়েছে তা তাদের অবাক করেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আলফনস কান্নাথামন, জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রস্তাব পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করার দিকে জোর দিয়েছেন। বলেছেল মোদির সরকার জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ করবে না। কেরল বিশপ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আর্চবিশপ সোসা পাকিয়াম একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, এমন প্রস্তাব শুধু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নয়, যারা নিজের ধর্মের জন্য ভাবিত, তাদের সবার উপরেই খারাপ প্রভাব ফেলবে। মহিলা কমিশন কেন্দ্রের কাছে একপেশে রিপোর্ট জমা দিয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন পাকিয়াম। তাঁর মতে এ বিষয়ে চার্চের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করা হয়নি।
[ দিল্লিতে অনাহারে মৃত তিন শিশুর মামার বাড়ির হদিশ মিলল ঝাড়গ্রামে ]
জাতীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কমিশনের সচিব জর্জ কুরিয়েনকেও চিঠি লেখেন পাকিয়াম। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে চার্চের বিষয়টি তোলার জন্য আবেদনও করেন তিনি। পাকিয়ামের চিঠিটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে ফরোয়ার্ড করে দেন কুরিয়েন। কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী কান্নাথানাম জানিয়েছেন, এটি কোনও সরকারি পদক্ষেপ নয়। তাঁর মতে, জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার ব্যক্তিগত মতামত এটি। এতে সরকারের কোনও হাত নেই।
[ আরও আধুনিক হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, উর্দিতে বসছে ক্যামেরা ]
ঘটনার সূত্রপাত গতমাসে। কেরলের মালাঙ্করার একটি চার্চের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জানান এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ ছিল, তাঁর স্ত্রীকে দিনের পর দিন যৌন নিগ্রহ করেছে চার্চের এক ধর্মযাজক। তাঁর স্ত্রী নিজে একথা স্বীকার করেছেন। এমনকী বিষয়টি কাউকে যাতে না বলা হয়, তার জন্য ওই মহিলাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন ওই মহিলার স্বামী। একটি অডিও ক্লিপে অভিযোগকারী ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রীকে বিয়ের আগে এক ধর্মযাজক যৌন নির্যাতন করত। বিয়ের পরও তা বন্ধ হয়নি। বরং উত্তরোত্তর তা বাড়তে থাকে। তাঁর স্ত্রী একথা অন্য এক ধর্মযাজককে জানান। সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে সেও সেই একই কাজ করতে শুরু করে। এরপর সেই দ্বিতীয় ধর্মযাজক কথাটি আরও তিনজনকে বলে।
এই ঘটনার পর ওই মহিলার সম্মান ও অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসে জাতীয় মহিলা কমিশন। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে তারা। এরপর তাদের রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রিপোর্টের কপি পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী মানেকা গান্ধীর কাছেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.