সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট থেকেই দস্যিটার শরীরে বাসা বেঁধেছিল ক্যানসার। তাই আর পাঁচটা শিশুর তুলনায় খুদেকে বড় করে তোলা পরিজনদের কাছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে হাঁফিয়ে উঠেছেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি। এ পর্যন্ত হার না মানা লড়াই চলছিল কোনওক্রমে। কিন্তু করোনা রুখতে লকডাউনে আরও কঠিন হল লড়াই। ক্যানসার আক্রান্ত খুদের ওষুধের জোগাড় করতে না পেরে মাথায় হাত পরিজনদের। বিপদের দিনে দেবদূতের মতো ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন এক পুলিশকর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁদের সাহায্যে ওষুধ পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে পরিজনদের।
কেরলের আলাপ্পুজার বাসিন্দা বছর চারেকের ওই খুদে। প্রতি মাসেই একবার করে তিরুবনন্তপুরমের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কারণ, সেখানেই চলে তার কেমোথেরাপি। তবে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই মুহূর্তে কেমোথেরাপি হবে না তার। পরিবর্তে একটি ওষুধ খাওয়াতে বলা হয়েছে তাকে। কিন্তু বিপদ হল অন্য। প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ প্রায় সর্বত্রই অমিল। তার ফলে মাথায় হাত পরিবারের। সমস্যার কথা পুলিশকর্মী অ্যান্টনি রথীশকে জানান তাঁরা। তিনি ফোনে যোগাযোগ করেন তাঁর বন্ধু বিষ্ণুর সঙ্গে। অতীতে একইসঙ্গে কাজ করতেন তাঁরা। বর্তমানে বিষ্ণু তিরুবনন্তপুরম হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীর কাজ করেন। তাঁকে ওষুধের নাম জানান অ্যান্টনি। ওষুধ জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
বন্ধুর কথা ফেলতে পারেন না বিষ্ণু। ওষুধের জন্য খোঁজ শুরু করেন তিনি। পেশাগত পরিচিতির জোরে ওষুধ জোগাড় করে ফেলেন বিষ্ণু। কিন্তু লকডাউনের মাঝে কীভাবে ওই শিশুর পরিবারের হাতে ওষুধ পৌঁছে দেবেন, তা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিলেন না ওই স্বাস্থ্যকর্মী। নিজের মোটর বাইকটি দেখেই বুদ্ধি মাথায় আসে তাঁর। স্থির করেন বাইকে চড়ে গিয়েই খুদের পরিজনদের হাতে ওষুধ পৌঁছে দেবেন তিনি। সেই অনুযায়ী প্রায় ১৫০ কিলোমিটার রাস্তা বাইক চালিয়ে শিশুর পরিজনদের কাছে পৌঁছন। বিষ্ণুর হাত থেকে ওষুধ পাওয়ার পরই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে খুদের পরিবার। কীভাবে যে ওই পুলিশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীকে ধন্যবাদ জানাবেন, তা বুঝতেই পারছেন না একরত্তির পরিজনেরা। বিপদের সময় তাঁরা দেবদূতের মতো হাজির না হলে যে কী করতেন, তা ভেবে শিউরে উঠছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.