সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্যাবিধ্বস্ত অসমের পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। এহেন অবস্থায় গুয়াহাটিতে বাবার স্কুটি থেকে খোলা নালায় পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক শিশুর। দুর্ঘটনার তিন দিন পর রবিবার তার দেহ খুঁজে পেল উদ্ধারকারী দল।
লাগাতার বর্ষণে জলের তলায় অসমের বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার বাবার স্কুটি করে বাড়ি ফিরছিল ৮ বছরের অবিনাশ। সেই রাস্তাও জলে ডুবে ছিল। আচমকা এক ঝাঁকুনিতে স্কুটি থেকে জল ভর্তি নালায় পড়ে যায় সে। স্কুটি ফেলে ছেলেকে ধরার চেষ্টা করেন বাবা। তবে পারেননি। তাঁর চোখের সামনে জলের স্রোতে তলিয়ে যায় অবিনাশ। হন্যে হয়ে তিনি খুঁজতে থাকেন ছেলেকে। কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি তখন। অবশেষে রবিবার সন্ধান মিলল শিশুটির দেহের। অবিনাশের বাবা হীরালাল সরকার কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “ছেলে পড়ে যেতেই আমিও লাফ মেরে ওকে ধরার চেষ্টা করি। ওর হাতটা দেখতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু ধরতে পারলাম না।”
ছেলে নিখোঁজ হতেই প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই হাতে লোহার রড নিয়ে তাকে খুঁজতে থাকেন দিশেহারা বাবা। ছেলেকে খুঁজে পাননি। তবে হাতে আসে ছেলের জুতোজোড়া। একাই রাতভর তল্লাশি চালানোর পর ব্যর্থ হয়ে এলাকাতেই রাত কাটান অসহায় যুবক। এদিকে খবর যায় বাড়িতে। প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়। দিশেহারা পিতার পুত্রকে খোঁজার খবর য়ায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা কাছে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকারী দল নামাতে নির্দেশ দেন তিনি। উদ্ধার কাজে সুপার সাকার, স্নিফার ডগ, এক্সক্যাভেটর এবং উদ্ধারকারী দলকে শিশুটির খোঁজে মোতায়েন করা হয়। অবশেষে রবিবার অবিনাশের দেহ উদ্ধার করা হয়।
এক আধিকারিক জানান, বাচ্চাটিকে খুঁজতে কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে আবৃত ড্রেনের কিছু অংশ তোলা হয়। পরে উদ্ধার হয় শিশুটির দেহ। হীরালাল এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করেছেন।
এদিকে, অবিরত বৃষ্টির ফলে এখনও অনিলনগর, নবীননগর, এবং রুক্মিণীগাঁও জলের তলায় রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অসমের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ফের ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার ফলে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫২। রাজ্যের ৩০টি জেলা বন্যাকবলিত। প্রায় ২৪ লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। বেশ কিছু জায়গায় ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.