Advertisement
Advertisement
Maha Kumbh

‘প্রথমবার মৃত্যুভয় পেলাম’, মহাকুম্ভে চোখের সামনে পদপিষ্ট হতে দেখে আতঙ্কে কলকাতার তীর্থযাত্রী

অনেক ট্রেন বাতিল হওয়ায় কীভাবে কলকাতায় ফিরবেন, বুঝতে পারছেন না কলকাতার তীর্থযাত্রী।

Kolkata's pilgrimage shares experience of Maha Kumbh stampede incident
Published by: Arpan Das
  • Posted:January 29, 2025 12:37 pm
  • Updated:January 29, 2025 12:40 pm  

দেবাশীষ শীল, প্রয়াগরাজ: রাত হয়তো তখন দুটো। প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে সদ্য স্নান সেরে উঠেছি। সঙ্গে পাঁচজন বন্ধু। এবার অনেকটা পথ হেঁটে ফিরতে হবে। কিন্তু তার মধ্যেই যেন গোটা পৃথিবী এসে পড়ল কাঁধের উপর। কয়েকশো মানুষের চাপ কোনও মতে সামলাতে সামলাতে যা দেখলাম, তাতে জীবনে প্রথমবার মৃত্যুভয় টের পেলাম। চোখের সামনে মানুষের পায়ের ভিড়ে পিষ্ট হয়ে গেলেন এক ব্যক্তি!

এই খানিকক্ষণ আগেই আমাদের পাশে ছিলেন তিনি। সঙ্গে তাঁর পরিবার। আমরা স্নান করতে যাওয়ার সময়ও দেখা হল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে গোটা পরিবেশটা বদলে গেল। ত্রিবেণী সঙ্গম জুড়ে এখন শুধু হাহাকার। শুনছি অন্তত দশজনের মৃত্যু ঘটেছে পদপিষ্ট হয়ে। আহত আরও অনেকে। আমাদের সামনে পদপিষ্ট হওয়া ওই ব্যক্তিকেও উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। তখনই ওঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রার্থনা করি, ওঁর যাতে প্রাণসংশয় না হয়।

Advertisement

চোখের সামনে এই ভয়ানক পরিস্থিতি দেখে কিছুক্ষণের জন্য বোধ হারিয়ে ছিলাম। কয়েক হাজার মানুষের ঠেলাঠেলিতে রীতিমতো অসহায় অবস্থা আমাদেরও। কলকাতা থেকে রওনা দেওয়ার পর দুই রাত ঘুম হয়নি। মঙ্গলবার রাত কেটেছে রাস্তায়। কোনও আখড়া বা তাঁবুতে ঠাঁই মেলেনি। হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে রাস্তায় থাকতে হয়েছে। ভেবেছিলাম, মহাকুম্ভে স্নান করেই স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেব। কিন্তু রাত দুটোর সময় সমস্ত কিছু বদলে গেল। হাতে চোট পেয়েছি। ব্যথা হচ্ছিল। তবুও কোনও রকমে সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে ভিড় ঠেলে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলাম। আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে যাচ্ছিলাম।

Kolkata's pilgrimage shares experience of Maha Kumbh stampede incident
প্রয়াগরাজে প্রথমদিন। তখনও জানতাম না এরকম পরিস্থিতি হবে।

কিন্তু যাবই বা কোথায়? প্রয়াগরাজের রাস্তায় পড়ে আছে ছেঁড়া চটি বা ব্যাগপত্র। সর্বত্র শুধুই হাহাকার। বন্ধুরা ততক্ষণে বিভিন্ন জায়গায় ছিটকে পড়েছে। তবে তাদের কারও বড়সড় বিপদ হয়নি, এই রক্ষা। ভোর হতে বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেল। ইন্টারনেটও সব জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে না। কোনও রকমে লোকেশন ট্র্যাক করে সবাইকে খুঁজে পেয়েছি। আপাতত স্টেশনের দিকে হাঁটছি। কিন্তু শুনতে পাচ্ছি, অনেক ট্রেনও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। জানি না, কবে কীভাবে বাড়ি ফিরব।

(অনুলিখন: অর্পণ দাস)

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement