ফাইল ছবি।
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ইডির পর এবার সিবিআই মামলাতেও জামিন। নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ এবার জেলমুক্তির পথে। শুক্রবার কুন্তলকে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ। তবে বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে তাঁকে।
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে নিয়োগ দুর্নীতি (Teacher Recruitment Scam) মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সিবিআইও গ্রেপ্তার করে। তদন্তে নেমে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক তথ্যও পায় দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এদিকে বারবার আদালতে জামিনের আর্জি জানান কুন্তল। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হন তিনি। গত ২০ নভেম্বর তিনি ইডির মামলায় জামিন পান কলকাতা হাই কোর্টে। শুক্রবার শর্তসাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়া কুন্তলকে সিবিআইয়ের মামলাতেও জামিন দিল।ইডির মামলায় প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আগেই জামিন পেয়েছেন। ফলে তাঁর জেলমুক্তিতে আর কোনও বাধা নেই।
তবে জামিন পেলেও কুন্তলকে একাধিক শর্ত মানতে হবে। তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। নিম্ন আদালত ও তদন্তকারী সংস্থার অনুমতি ছাড়া রাজ্যের বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। তদন্ত প্রক্রিয়াকে কোনওভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন, এমন প্রমাণ পেলেই জামিন খারিজ হয়ে যাবে। এজেন্সি ও আদালতে মোবাইল নম্বর জমা রাখতে হবে। যে কোনও সময় তদন্তকারী আধিকারিকরা তাঁকে তলব করতে পারেন। এই মামলা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা যাবে না। এমনকী তিনি কোনও সরকারি পদেও থাকতে পারবেন না। তবে কুন্তলের রাজনৈতিক পদে থাকা নিয়ে কোনও নির্দেশিকা শীর্ষ আদালত দেয়নি।
এদিন মামলার শুনানিতে কুন্তলের আইনজীবীরা দাবি করেন, “কুন্তল ১৯ মাস ধরে জেলে। ২০২৩ এর ২১ জানুয়ারি ইডি গ্রেপ্তার করে। সেই মামলায় ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন তিনি। ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, নিম্ন আদালতে চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারী সংস্থা। তাতে কোনও নথি ছিল না। ২৩ জুলাই সিবিআই জানাই, এখনও তদন্ত চলছে। তাছাড়া এই মামলায় ৩ জন আগেই জামিন পেয়েছেন। তাহলে কুন্তলকে কতদিন আটকে রাখা হবে?” পালটা সিবিআই আইনজীবীরা বলেন, “কুন্তল খুব প্রভাবশালী, প্যারালাল ওয়েবসাইট তৈরি করে বিরাট কেলেঙ্কারি করেছে। যোগ্যদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের টাকা নিয়েছে।” দুই পক্ষের সওয়াল শুনে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, “আমরা বুঝতে পারছি এই তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে। অনেক বছরও লাগতে পারে। ততদিন কীভাবে কাউকে আটকে রাখব? চার্জ গঠনের আগে তদন্ত শেষ হবে না। তার আগে বিচারপ্রক্রিয়াও শুরু হবে না।” এর পরই কুন্তলকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়। ঘটনাচক্রে সুপ্রিম কোর্টের এই বেঞ্চেই আগামী সোমবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের মামলা। এই মামলার শেষ শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ যা যা পর্যবেক্ষণ করেছিল, তাতে আইনজীবী মহলের ধারণা, সোমবার পার্থর ভাগ্য খুললেও খুলতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.