সুব্রত বিশ্বাস: জনমানবের মধ্যে লেপার্ড বা চিতাবাঘ সাধারণত হামলা চালায় না। তবে আলিপুরদুয়ারের পর মহারাষ্ট্রের আর এ কলোনিতে খাদকের রূপ নিল এই চিতাবাঘই। শুক্রবার বিকেল থেকেই একটি লেপার্ড রীতিমতো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল। যা রীতিমতো ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যায় শনিবার সকালে।
আর এ কলোনির বনাঞ্চলের বুক চিরে একটি সড়ক চলে গিয়েছে আন্ধেরির দিকে। সেই সড়ক দিয়ে সকাল থেকে মানুষ যাতায়াত করে। তবে জঙ্গল এলাকা হওয়ায় পায়ে হাঁটেন না তাঁরা। মূলত বাহন মোটরসাইকেল। শীতের সকালে জঙ্গলের বুকচেরা রাস্তায় তখন ছুটে চলেছে বাইক। হিমেল হাওয়ার শন শন শব্দ পাতার সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটাচ্ছে। তখনই রীতিমতো ‘হালুম’ শব্দে বুক কেঁপে ওঠে বাইক আরোহীদের। সোজা জঙ্গল থেকে রাস্তার উপর গতিশীল বাইকের আরোহীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘ। নখ আর দাঁতের খোঁচায় রক্তাক্ত শরীর নিয়ে আপ্রাণ বাঁচার চেষ্টা আরোহীর। খাদক-খাদ্যের এই টানাটানিতে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্য বাইক আরোহীরাও। আতঙ্কে চলন্ত বাইক ফেলে দেন তাঁরা। পড়ি কী মরি করে যে যেমন পারেন জঙ্গলের গাছে চড়ে বসেন। ভাবখানা এমন যে, চিতা গাছে উঠতেই পারে না। ডজন-ডজন মানুষের গাছে ওঠার হিড়িক দেখে আক্রান্তকে ছেড়ে দেয় চিতাবাঘ। এরপর রাস্তার উপর দিয়ে পড়ে থাকা অসংখ্য বাইকের পাশে পাহারাদারের ভূমিকা নিয়ে বসে পড়ে। বেশ খানিকক্ষণ একইভাবে বসে থাকে। রাস্তায় সার সার বাইক পড়ে, তার পাশে চিতাবাঘের অবস্থান দূর থেকে দেখে পিঠটান দেন বাইকে আসা মানুষজন। পরে নিজের ইচ্ছেতেই চিতাবাঘটি জঙ্গলে ফিরে যায়। হাফ ছেড়ে বাঁচেন মানুষজন। আহতকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আর এ কলোনি এলাকাটি রহস্য রোমাঞ্চে ঘেরা এক পরিবেশ। বনানী ঘেরা অঞ্চল। রাতের ঘনত্বের সঙ্গে ভৌতিক বিষয় তো রয়েছেই। পাশাপাশি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বাঘ-সিংহের মতো প্রাণীরাও এখানে ঘুরে বেড়ায় অবাধে। স্থানীয় মানুষজনরা যেমন প্রমোদ ভ্রমণের জন্য এখানে আসেন। তেমনই আসেন পর্যটকরা। জঙ্গলে আগুন লাগার মতো ঘটনা ঘটেছে প্রায় তিরিশ বার বলে স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন। প্রকৃতি প্রেম যতই হোক আতঙ্কও রয়েছে পাশাপাশি। ওই এলাকার মিল্ক কলোনি এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজে শুক্রবার একটি লেপার্ডকে ঘুরতে দেখা যায়। এটাই সেই লেপার্ড কিনা তা খতিয়ে দেখছে বন দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.