সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা হোক বা বিধানসভা, মোদি সরকারের আমলে কংগ্রেস (Congress), তৃণমূল (TMC)-সহ বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলেছে, দফা বাড়িয়ে ভোট করানো নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নিতেই ষড়যন্ত্র করে পাঁচ বা সাত দফায় ভোট করানো হয়। অপরপক্ষে বিজেপির (BJP) দাবি, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করতেই দফা বাড়ানো। বাংলার রাজনৈতিক হিংসার কথা মাথায় রেখেই এরাজ্যে আসন্ন লোকসভা ভোট হবে সাত দফায়। সত্যিই কি যুক্তির জোরেই বাংলায় সবচেয়ে বেশি সাত দফায় ভোট ঘোষণা করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন?
গোটা দেশ মিলিয়েই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন সাত দফাতে আয়োজন করছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত দফাতেই ভোট হবে। ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হবে ১৯ এপ্রিল থেকে। এরপর দ্বিতীয় দফা ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ ৭ মে। চতুর্থ দফা ১৩ মে, পঞ্চম দফা ২০ মে, ষষ্ঠ দফা ২৫ মে এবং ১ জুন হবে সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ। ভোটের ফল জানা যাবে ৪ জুন। উল্লেখ্য, বাংলা ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ ও বিহারেও সাত দফাতেই ভোট হবে।
অর্থাৎ বিজেপিশাসিত ৮০ লোকসভা আসনের উত্তরপ্রদেশে যেমন ভোট হবে সাত দফায়, তেমনই ৪০ আসনের বিহার ও ৪২ আসনের বাংলাতেও সাত দফায় ভোট। এখানেই প্রশ্ন উঠছে। ১৪ লোকসভা আসনের ঝাড়খণ্ডেও ভোট হচ্ছে ৪ দফায়। বিরোধীদের বক্তব্য, ঝাড়খণ্ডে বিরোধী দল ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চা ক্ষমতায় বলেই চার দফায় ভোট। অন্যদিকে ২৫টি লোকসভা আসন রয়েছে রাজস্থানে, তথাপি বিজেপি শাসিত মরুরাজ্যে ভোট হচ্ছে দুই দফায়।
তৃণমূল প্রথম থেকেই এক দফায় ভোট নিয়ে সরব ছিল। এদিন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল নেতারা। সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের কটাক্ষ, “বাংলায় ৪৩ দিন ধরে নির্বাচন চলবে। একটা করে ৪২ দিনে ৪২টা আসনে ভোট করতে পারত।” তিনি আরও বলেন, ‘আসলে রাজ্যের মতকে গুরুত্ব না দিয়ে যুক্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছ।” চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, ভেবচিন্তেই ৭ দফার ষড়যন্ত্র! ‘আম্পেয়ার ওদের, তবু খেলা হবে।’ দলের আত্মবিশ্বাসী রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “যত দফাতেই ভোট হোক না কেন বাংলায় ৪২ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি আসনে জিতবেই।”
স্বভাবতই কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির নেতারা। রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলার মানুষ যাতে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেজন্য একাধিক দফায় ভোট হওয়া জরুরি ছিল। কমিশন যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
উল্লেখ্য, এক দফায় ভোট হচ্ছে – অরুণাচল প্রদেশ, আন্দামান-নিকোবর, অন্ধ্রপ্রদেশ, চণ্ডীগড়, দিল্লি, গোয়া, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, লাক্ষাদ্বীপ, লাদাখ, মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, সিকিম, তামিলনাড়ু, পঞ্জাব, তেলঙ্গানা, উত্তরাখণ্ড, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ, পুদুচেরি, কেরল।
দুই দফায় ভোট – কর্নাটক, রাজস্থান, ত্রিপুরা, মণিপুর।
তিন দফায় ভোট– ছত্তিশগড়, অসম।
চার দফায় ভোট– ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড।
পাঁচ দফায় ভোট– মহারাষ্ট্র, জম্মু ও কাশ্মীর।
সাত দফায় ভোট– উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.