‘হাসি-কান্না হিরা-পান্না’য় শেষ হচ্ছে আরও একটা বছর। বিগত হতে চলা ২০২৪ সালে শিরোনামে কখনও উঠে এসেছে বেদনাদায়ক ঘটনা কখনও বা সুখস্মৃতি। এবছর অভিনয় জগৎ থেকে সঙ্গীত জগৎ, খালি হয়েছে একের পর সিংহাসন। খসে পড়েছে রাজনীতি থেকে শিল্পদুনিয়ার একাধিক তারা। সেই শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়। বছর শেষে সেসব দিনই ফিরে দেখল সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
মনমোহন সিং: ২৬ ডিসেম্বর প্রয়াত হন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। বয়স হয়েছিল ৯২। বয়সজনিত অসুখে ভুগছিলেন মনমোহন। ১৯৯১ সালে প্রথমবার রাজ্যসভার সদস্য হন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন অর্থমন্ত্রী। উদার অর্থনীতিকরণের মুখ্য রূপকার তিনিই। ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে পরপর দুবার মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হন।
রতন টাটা: ৯ অক্টোবর প্রয়াত হন শিল্পপতি রতন টাটা। ব্রিজ ক্যান্ডি হাসপাতালে জীবনাবসান হয় তাঁর। দিন কয়েক ধরে অসুস্থ ছিলেন। টাটা গোষ্ঠীকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারিগর তিনি। টাটা গ্রুপের অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান থাকাকালীন শিল্প সংস্থাকে পুরোপুরি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করেন রতন টাটা। জেআরডি টাটার প্রতিষ্ঠা করা বিমান সংস্থা স্বাধীনতার পর সরকারি মালিকানাধীনে চলে গিয়েছিল। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়াকে কিনে আবার তা টাটা গোষ্ঠীর কাছেই ফিরিয়ে আনেন। ফোর্ডের তৈরি ল্যান্ড রোভার ও জাগুয়ারকে টাটা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ২০০০ সালে পদ্মভূষণ ও ২০০৮ সালে পদ্মবিভূষণে তাঁকে সম্মানিত করে ভারত সরকার।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য: ৮ আগস্ট ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত হন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক সমস্যার জন্য ১১ বছর ধরে ঘরবন্দি ছিলেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সিওপিডি-তে ভুগছিলেন। ১৯৭৭-১৯৮২ পর্যন্ত প্রথম বাম সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯৯-তে উপমুখ্যমন্ত্রী হন। ২০০০-তে শারীরিক অসুস্থতার কারণে জ্যোতি বসু সরে দাঁড়ালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০০১-২০১১, পর পর দুবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন। তবে ২০১১-তে প্রবল তৃণমূল হাওয়ায় নিজের দীর্ঘদিনের গড় যাদবপুরেই পরাজিত হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাদা ধুতিতে কালির ছিটে পড়েছিল সিঙ্গুর পর্বে।
জাকির হুসেন: ১৫ ডিসেম্বর প্রয়াত হন জাকির হুসেন। হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন উস্তাদ। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তবলাবাদক হিসেবে সফর শুরু করেন জাকির হুসেন। মাত্র সাত বছর বয়সেই মঞ্চে একক অনুষ্ঠান করে তাক লাগানোর রেকর্ডও রয়েছে তাঁর। ভূষিত হয়েছেন পদ্ম সম্মানেও। পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ তিনটিই রয়েছে উস্তাদের ঝুলিতে। চলতি বছর গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছেন জাকির হুসেন। বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক অ্যালবাম হিসেবে ‘শক্তি’ ব্যান্ডের গানের অ্যালবাম ‘দিস মোমেন্ট’ পুরস্কার পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যান্ডের মুখ্য কণ্ঠশিল্পী শঙ্কর মহাদেবন। এবং তবলাবাদক জাকির হুসেন। তাঁদের হাত ধরেই ২০২৪ সালে ভারতে গ্র্যামি এসেছিল।
শ্যাম বেনেগাল: ৯০ বছর বয়সে ২৩ ডিসেম্বর প্রয়াত হলেন ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি পরিচালক শ্যাম বেনেগল। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ দশকে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতকে তিনি উপহার দিয়েছেন একের পর এক সিনেমা। ‘মন্থন’, ‘অঙ্কুর’, ‘ভূমিকা’, ‘জুনুন’, ‘মান্ডি’, ‘নিশান্ত’ ভারতীয় সিনেমার মাইলফলক। শুধু তাই নয়, ২০০১ সালে মুক্তি প্রাপ্ত জুবেদা ছবিটি বক্স অফিসের সঙ্গে সঙ্গে সমালোচকদের মন জয় করেছিল। গত বছরই ‘মুজিব: দ্যা মেকিং অফ নেশন’ নামক একটি সিনেমা পরিচালনা করেছিলেন যেখানে ভারত এবং বাংলাদেশের একাধিক অভিনেতা অভিনয় করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন শ্য়াম বেনেগল। ১৯৯১ সালে তাঁকে দেওয়া হয় পদ্ম ভূষণও।
শ্রীলা মজুমদার: ২৭ জানুয়ারি প্রয়াত হন অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার। বিগত তিন বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেছেন বাংলা থেকে শুরু করে হিন্দি বিনোদুনিয়ার বিভিন্ন নামীদামি অভিনেতাদের সঙ্গে। মৃণাল সেনের হাত ধরে মাত্র ১৬ বছর বয়সে অভিনয় কেরিয়ার শুরু করেন শ্রীলা। শেষ সিনেমা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পালান’। শাবানা আজমি, নাসিরুদ্দিন শাহ, স্মিতা পাটিলের সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি। ২০০৩ সালে তিনি ‘চোখের বালি’ সিনেমায় ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের জন্য বাংলায় ডাবিংও করেছিলেন।
অঞ্জনা ভৌমিক: ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিক। দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন ক্যানসারে। ছয় থেকে আটের দশকে বাংলা সিনেমার পর্দায় দাপিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘চৌরঙ্গী’, ‘থানা থেকে আসছি’, ‘নায়িকা সংবাদ’-এর মতো ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। উত্তমকুমারের সঙ্গে মোট জুটি বেঁধেছেন ৭টি ছবিতে। তবে তাঁর অভিনয় জীবন খুবই অল্প। অভিনেত্রীর দুই মেয়ে নীলাঞ্জনা ও চন্দনা ভৌমিকও অভিনয়কেই কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেন। নীলাঞ্জনা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সফল প্রযোজক। অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকের আরেকটি পরিচয় তিনি অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তর শাশুড়ি।
পঙ্কজ উদাস: ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী পঙ্কজ উদাস। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থ ছিলেন তিনি। গজলের মধ্য়ে দিয়েই ভারতীয় সঙ্গীতজগতে ছাপ ফেলেছেন কিংবদন্তি শিল্পী। তবে আটের দশকে একের পর এক হিন্দি ছবির গানেও শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। ‘চিঠঠি আই হ্যায়’ গান তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। এছাড়াও, ‘চান্দি জ্যায়সা রং’,‘না কজরে কি ধার’,‘জিয়ে তো জিয়ে ক্যায়সে’,‘আহিস্তা’র মতো গানে মন জয় করেছিলেন পঙ্কজ। শুধু হিন্দি সিনেমার গান নয়। পঙ্কজের গাওয়া ‘নশা’, ‘পয়মানা’, ‘হসরত’, ‘হামসফর’এর মতো অ্য়ালবামও চিরস্মরণীয়।
স্বামী স্মরণানন্দ: ২৬ মার্চ প্রয়াত হন বেলুড় মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজ। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। স্বামী আত্মস্থানন্দের জীবনাবসানের পরে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেন। তাঁর বহু গুণমুগ্ধের তালিকায় আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।\
অংশুমান গায়কোয়াড়: দীর্ঘদিন ধরেই শরীরে থাবা বসিয়েছিল মারণরোগ ক্যানসার। ৩১ জুলাই লন্ডনের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার অংশুমান গায়কোয়াড়। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত দেশের হয়ে ৪০টি টেস্ট ও ১৫টি ওয়ানডে খেলেন তিনি। ভারতীয় দলের কোচও ছিলেন। তাঁর কোচিংয়ে ভারত ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রানার্স আপ হয়। শারজায় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তাঁর কোচিংয়েই। তবে দীর্ঘদিন ধরেই ব্লাড ক্যানসারে ভুগছিলেন জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা।
উৎপলেন্দু চক্রবর্তী: ২০ আগস্ট প্রয়াত হন জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। আটের দশকে ‘ময়নাতদন্ত’, ‘চোখ’, ‘দেবশিশু’র মতো চর্চিত ছবি পরিচালনা করেছেন। জাতীয় পুরস্কার ছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে আন্তর্জাতিক পুরস্কার, রাষ্ট্রপতি সম্মান ও বঙ্গবিভূষণ। কিন্তু তারপর আর গ্ল্যামার দুনিয়ার মূলস্রোতে সেভাবে পাওয়া যায়নি তাঁকে।
সীতারাম ইয়েচুরি: ১২ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ফুসফুসে সংক্রমণের জেরে দিল্লি এইমসে চিকিৎসাধীন ছিলেন বাম নেতা। ১৯৫২ সালের ১২ আগস্ট মাদ্রাজে জন্ম। মেধাবী ছাত্র ইয়েচুরি সিবিএসই বোর্ডের হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষায় দেশের মধ্যে প্রথম হন। পরে অর্থনীতি নিয়ে বিএ এবং এমএ পাশ করেন। দুই ক্ষেত্রেই প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯৭৪ সালে ভারতের ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন। এক বছর পর ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। জরুরি অবস্থার সময় জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির ছাত্র ইয়েচুরি গ্রেপ্তার হন। ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বর্ষীয়ান নেতা।
বাবা সিদ্দিকী: ১২ অক্টোবর নিজের বিধায়ক পুত্রের দপ্তরের সামনে দাঁড়িয়ে দশেরার বাজি ফাটানোর সময় আততায়ীদের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকি। লীলাবতী হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় এনসিপির অজিত পওয়ার শিবিরের নেতার। খুনের নেপথ্যে বিষ্ণোই গ্যাং। কয়েক দিনের মধ্যে ‘খুনি’কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এই খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে টিনসেল টাউনে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। আতঙ্কে ভুগছেন বলিউডের বহু অভিনেতা।
মনোজ মিত্র: ১২ নভেম্বর প্রয়াত মনোজ মিত্র। থিয়েটার ও চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি শিল্পী বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ৮৫ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ‘বাঞ্ছারামার বাগান’, ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ খ্যাত অভিনেতা। সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার জয়ী নট ও নাট্যকারের প্রয়াণে বাংলা সংস্কৃতি জগতে বিরাট শূন্যতা তৈরি হল। ১৯৫৭ সালে কলকাতায় মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু মনোজ মিত্রর। ১৯৭৯ সালে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে বিভিন্ন কলেজে দর্শন বিষয়েও শিক্ষকতা করেন। যদিও প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’ লেখেন ১৯৫৯ সালে কিন্তু ১৯৭২-এ ‘চাক ভাঙা মধু’ নাটকের মাধ্যমে তিনি পরিচিতি তৈরি হন। ওই নাটকটির মঞ্চ নির্দেশনা করেন বিভাস চক্রবর্তী। নাট্যগোষ্ঠী ‘সুন্দরম’ প্রতিষ্ঠাতাও মনোজ মিত্র।
উমা দাশগুপ্ত: ১৮ নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘পথের পাঁচালী’র দুর্গা ওরফে উমা দাশগুপ্ত। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। শৈশব থেকেই থিয়েটার করতেন উমাদেবী। যে স্কুলে পড়তেন, সেখানকার প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পরিচয় ছিল। আর সেই শিক্ষকের সুবাদেই মাণিকবাবু আবিষ্কার করেছিলেন ‘পথের পাঁচালি’র দুর্গাকে। তারপর থেকে লাইম লাইটের আড়ালে থাকা সেই অভিনেত্রী বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন উমাদেবী।
সুনীতিকুমার পাঠক: ৪ ডিসেম্বর শতবর্ষ পেরিয়ে প্রয়াত হন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত বৌদ্ধ পণ্ডিত সুনীতিকুমার পাঠক। বিশ্বভারতীর প্রবীণ আশ্রমিক ছিলেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন আজীবন বৌদ্ধ শাস্ত্রে মগ্ন থাকা সুনীতিকুমার পাঠক। শান্তিনিকেতনের অবনপল্লির বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ১৯২৪ সালের ১ মে পশ্চিম মেদিনীপুর মলিঘাট গ্রামে জন্ম। প্রথমে সংস্কৃত কলেজ ও পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন সুনীতিকুমার। ১৯৫৪ সালে ২০৫ টাকা বেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুঁথি বিভাগে যোগদান করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি পুরস্কার-সহ বহু সম্মানে তিনি ভূষিত হয়েছেন। মহাবোধি সোসাইটি তাঁকে ভাণক এবং মঞ্জুশ্রী সম্মানে সম্মানিত করেছে। এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে পেয়েছেন এস. সি. চক্রবর্তী স্বর্ণ পদক। ২০১৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন দেশিকোত্তম। দুশোর বেশি প্রবন্ধ ছাড়াও বহু গভীর দৃষ্টিসম্পন্ন নিবন্ধের রচয়িতা তিনি। বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, তিব্বতী, চিনা, মঙ্গোলিয়া – নয় ভাষাতেই তিনি সমান সাবলীল ছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.