সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের অমানবিকতার মুখ দেখল শহুরে সমাজ। সরকারি বাসের চাকার তলায় পিষ্ট তরুণের করুণ আর্তি পৌঁছল না কারও কানে। রক্তাক্ত, গুরুতর জখম সাইকেল আরোহীকে সাহায্যের বদলে তাঁর ছবি-ভিডিও তুলতেই মশগুল হল পথচলতি মানুষ। কেউ কেউ তো দেখেও দেখল না। শুশ্রুষার জন্য যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল ততক্ষণে সব শেষ। পথদুর্ঘটনায় ১৮ বছরের আনোয়ার আলির মৃত্যুর জন্য দায়ী কে, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই কারও কাছে। ফের একবার বেআব্রু হল মানবিকতাবোধ। একটি কন্নড় সংবাদমাধ্যম সেই মর্মান্তিক ভিডিও তাদের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেছে।
বিশ্বের অন্যতম ডায়নামিক সিটির তকমা পাওয়া বেঙ্গালুরু থেকে ৩৮০ কিমি দূরে কোপ্পালে বৃহস্পতিবার ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। সাইকেল আরোহী আনোয়ারকে প্রথমে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি সরকারি বাস। তারপর বাসের চাকায় পিষ্ট হন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় ২০-২৫ মিনিট রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সাহায্য করার বদলে পথচারীরা তাঁর ছবি, ভিডিও তুলতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বাঁচানোর আর্তি কারও কানে পৌঁছয়নি। অনেকক্ষণ পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। হাসপাতালে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
আনোয়ারের দাদা রিয়াজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘কেউ বাঁচানোর চেষ্টা করত তাহলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত আমার ভাই।’ বলতে বলতে গলা ধরে আসছিল রিয়াজের। প্রসঙ্গত, তিনদিন আগেই মাইসুরুতে একটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলিশ জিপের মধ্যেই আটকা পড়ে মারা যান এক পুলিশ আধিকারিক। তখনও একইভাবে পথচলতি মানুষ সাহায্যের বদলে মোবাইল ফোনে তাঁর ছবি তুলতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন। গত বছর একইভাবে বেঙ্গালুরুতে এক বাইক আরোহী ট্রাকে পিষ্ট হয়ে রাস্তায় কাতরাচ্ছিলেন। তাঁকে সাহায্য করার বদলে সবাই মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। বারবার একইধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চিন্তায় ফেলেছে কর্নাটকের প্রশাসনকে। মানবিকবোধ কি সত্যিই হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের, প্রশ্ন সমাজের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.