প্রতীকী ছবি।
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সরকারি অনুদানে চলা স্কুল ‘মার্জ অ্যান্ড ক্লোজার’-এর নামে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বদলে পিপিপি মডেলে স্কুল খুলে বাড়তি ফি নিয়ে দরিদ্রদের শিক্ষা থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে ‘সিএম রাইজ’ নামে চলা এমন মধ্যপ্রদেশ(Madhya Pradesh) মডেলের তীব্র বিরোধিতা করে শনিবার সেই রাজ্যেই কনভেনশন করল সেভ এডুকেশন কমিটি।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের শিক্ষা দপ্তর ‘সিএম রাইজ’ নামে একটি প্রকল্প চালু করে। যার মাধ্যমে প্রতি ১৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে প্রাইমারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত একটি করে স্কুল তৈরি করা হচ্ছে পিপিপি মডেলে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই স্কুলগুলিতে শিক্ষার সব সুযোগ থাকবে। যেখানে সরকারি অনুদানে চলা স্কুলগুলিতে সেই সুযোগ একেবারে কম। সে রাজ্যের শিক্ষাদপ্তরের তথ্য বলছে, ২১ হাজার স্কুলের জন্য বর্তমানে একজন করে শিক্ষক রয়েছেন। আর ২ হাজার ৬০০ স্কুলে কোনও শিক্ষকই নেই। সেভ এডুকেশন কমিটির তরফে এই তথ্য সামনে রেখেই আক্ষেপ, এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা বাধ্য হচ্ছেন পিপিপি মডেলে চলা ওই স্কুলে বাচ্চাদের ভরতি করাতে, যেখানে বার্ষিক ফি ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। ফল শিক্ষক এবং পড়ুয়ার অভাবে সরকারি অনুদানে চলা স্কুলগুলিকে ‘মার্জ অ্যান্ড ক্লোজার’-এর নামে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালের আগে সে রাজ্যে স্কুলের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার মতো। নতুন প্রকল্প চালু হওয়ায় ‘মার্জ অ্যান্ড ক্লোজার’-এর জেরে ২৭ হাজার স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেভ এডুকেশন কমিটির আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে সরকার পোষিত স্কুল আর থাকবেই না। মধ্যপ্রদেশের গুনার এদিনের কনভেনশনে এই ইস্যুতেই বিস্তারিত চর্চা চলেছে দিনভর।
কনভেশনে সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক অফিসার মুরারি শর্মা। বক্তব্য রাখেন সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক ড. তরুণকান্তি নস্কর, অধ্যাপক শ্যামমোহন মিশ্র, আইনজীবী মহেশ বৈরাগী, সংগঠনের মধ্যপ্রদেশের সম্পাদক শচীন জৈন, পিজি কলেজ স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ভূতপূর্ব সম্পাদক শোভনা শ্রীবাস্তব প্রমুখ। শচীন জৈন এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, “নতুন প্রকল্প চালু হওয়ার পর দারিদ্রসীমার নিচের জনসাধারণ শিক্ষা ক্ষেত্রে খুবই সমস্যার মুখে পড়েছেন। তাদের খরচ আগের তুলনায় তিন গুণ বেড়েছে।” অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্করের কথায়, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকার শিক্ষার আর্থিক দায়িত্ব অস্বীকার করছে। এর ফলে সরকার পোষিত শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অবলুপ্তি হবে, শিক্ষার খরচ বাড়বে, গরীব, মধ্যবিত্ত পরিবার শিক্ষার অঙ্গন থেকে দূরে সরে যাবে। শিক্ষার ‘রাইজ’ হবে না বরং তা অস্তাচলে যাবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.