সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাকরির খোঁজে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে! মাসের পর মাস মায়ানমারে কল সেন্টারের ‘দাসত্ব’ করার পর অবশেষে উদ্ধার ৬০ ভারতীয়। মহারাষ্ট্র পুলিশের উদ্যোগে ওই ভারতীয়দের উদ্ধার করার পাশাপাশি এক বিদেশি নাগরিক-সহ ৫ এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে পুলিশ।
পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, থাইল্যান্ড-সহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে মোটা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতীয়দের পাসপোর্ট ও ভিসা তৈরি করে দিত এই সব এজেন্টরা। এরপর ভারত থেকে তাঁদের পাঠানো হত থাইল্যান্ডে। সেখান থেকে ছোট নৌকায় নদী পার করে তাঁদের পাঠানো হত মায়ানমারে। এখানে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি তাঁদের নিয়ে যেত গোপন ডেরায়। সেখানে ভারতীয়দের ব্যবহার করেই ভারতের বাসিন্দাদের লুটের ছক কষা হত। চলত সাইবার প্রতারণা চক্র। সেখানেই বিনা পারশ্রমিকে ক্রীতদাসের মতো কাজ করানো হত এই সব ভারতীয়দের। মহারাষ্ট্র পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিদেশের মাটিতে এই বিরাট প্রতারণা চক্রের হদিশ পেয়েই তৎপর হয় মহারাষ্ট্র পুলিশ। অন্য এজেন্সির সঙ্গে মিলে মায়ানমার থেকে উদ্ধার করা হয় ৬০ জনকে। যদিও বন্দিদের উদ্ধার করতে মায়ানমারে ঢুকে এই অভিযান চালানো হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে এমনই প্রতারণার ফাঁদ থেকে ২৮৩ জন ভারতীয়কে উদ্ধার করা হয়েছিল। ভালো চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এদের নিয়োগ করা হয়েছিল থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে। জোর করে অপরাধমূলক কাজ করতে বাধ্য করা হয় ওই ভারতীয়দের। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই তৎপর হয় বিদেশমন্ত্রক। যোগাযোগ করা হয় মায়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে। সক্রিয় হয় থাইল্যান্ড, মায়ানমারে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস। ২৮৩ জনকে উদ্ধার করে বায়ুসেনার বিমানে দিল্লি পাঠানো হয় তাঁদের।
জানা যায়, থাইল্যান্ডের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল রিজিয়ন বা সোনালি ত্রিভুজ এলাকা অপরাধের জন্য কুখ্যাত। মায়ানমার, লাওস ও থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী প্রায় ৯ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলে বিস্তৃত এই পাহাড়ি এলাকা। ভয়ংকর এই অপরাধ চক্র চালাতে এই অঞ্চলকেই বেছে নেয় অপরাধীরা। এখান থেকেই ভারতের নানা প্রান্তে ফোন করে পাতা হত প্রতারণার ফাঁদ। আর আগে একাধিক ডিজিটাল অ্যারেস্টের তদন্তের নেমে এই অঞ্চলের খোঁজ পেয়েছিল ভারতের তদন্তকারী বিভাগ। একবার এদের ফাঁদে পড়লে মুক্তির কোনও রাস্তা থাকত না। কার্যত ক্রীতদাস করে রাখা হত তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.