সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিয়ের কয়েকবছরের মধ্যে স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হন৷ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি৷ দ্বিতীয়বার সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর দম্পতি ভেবেছিলেন, এবার হয়তো আশাপূরণ হবে৷ কোল আলো করে আসবে কন্যা৷ কিন্তু ঘরে লক্ষ্মী এল না৷ পরিবর্তে জন্ম নিয়েছে পুত্রসন্তান৷ নিজের কন্যা না হওয়ার সেই যন্ত্রণা থেকে এক ব্যক্তি যা কাণ্ড ঘটালেন, তা শুনে তাজ্জব সকলেই৷
কৃষ্ণ দত্ত তিওয়ারি নামে বছর চল্লিশের ওই ব্যক্তির উত্তর দিল্লির রাজৌরি গার্ডেনের বাসিন্দা৷ পেশায় গাড়িচালক কৃষ্ণ দত্ত স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। এলাকায় সুনাম রয়েছে তাঁর৷ কিন্তু দিনকয়েক আগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে৷ কী কারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করল, তা প্রথমে বুঝতে পারেননি পরিজনেরা৷ খোঁজখবর নিয়ে গাড়ি চালকের স্ত্রী জানতে পারেন, মাত্র দু’মাসের মধ্যে দুই কিশোরীকে অপহরণ করেছেন তাঁর স্বামী৷ একথা শুনে প্রায় আকাশ থেকে পড়েন ওই মহিলা৷ এহেন কাজ যে কৃ্ষ্ণ দত্ত তিওয়ারি করতে পারেন, তা ভাবতেও পারেননি তিনি। ভাবতে পারছেন না তাঁর প্রতিবেশীরাও৷
উত্তর দিল্লির ডেপুটি কমিশনার মণিকা ভরদ্বাজ বলেন, ‘‘গত দু’মাসে দুই কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ পাই আমরা৷ নিখোঁজ কিশোরীদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়৷ তবে নিখোঁজ ডায়েরি করার কয়েকদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থভাবে বাড়িও ফিরে আসে তারা৷’’ বাড়ি ফিরে আসার পর পুলিশ তাদের জেরা করে৷ দু’জনেই জানায়, হরিনগর এলাকার আশপাশ থেকে এক ব্যক্তি গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় তাদের৷ কিশোরীদের বয়ানের ভিত্তিতে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ৷ ওই সিসিটিভি ফুটেজেই পুলিশ এক ব্যক্তিকে কিশোরীদের অপহরণ করতে দেখা যায়৷ ফুটজ দেখেই পুলিশ কৃষ্ণ দত্ত তিওয়ারিকে গ্রেপ্তার করে৷
কিন্তু কেন ওই কিশোরীদের গ্রেপ্তার করল গাড়িচালক? পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় প্রথমে অপহরণের কথা স্বীকার করেনি সে৷ দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা পুলিশি জেরায় রীতিমতো ভেঙে পড়ে ধৃত। পরে অপহরণের কথা স্বীকার করে নেয় সে৷ পুলিশকে সে জানায়, কন্যা সন্তানের আকাঙ্খা তাঁর বহুদিনের। কিন্তু দুই পুত্রসন্তানের বাবার কন্যাস্নেহ বঞ্চিত হৃদয় অপূর্ণ সাধ পুরণ করতেই দুই কিশোরীকে অপহরণ করে।গোপন ডেরায় নিয়ে গিয়ে কিশোরীদের যত্নেই রাখত সে৷ নিজের সন্তানের মতোই যত্ন আত্তি করেছে। অপহরণের নেপথ্যে এসব কাহিনি শুনে তাজ্জব তদন্তকারীরা৷ ধৃতকে কারাগারে পাঠানোর বদলে মানসিক চিকিৎসকের কাছেই নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ৷ গোটা ঘটনা জানার পর কৃষ্ণ দত্ত তিওয়ারির পরিবার এবং আত্মীয়, বন্ধুরা সকলেই ভাবছেন, তাঁকে অপরাধী কি আর বলা যায়? বোধহয় যায় না। তার বদলে সহানুভূতিই হয় কৃষ্ণর প্রতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.