সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স মোটে ষোলো। এই বয়সে আর পাঁচজন কিশোর-কিশোরী নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতেই ভালবাসে। আড্ডা-হাসি-হুল্লোড় আর পড়াশোনায় কেটে যায় সময়। কিন্তু সবার থেকে আলাদা গৌঋষি নারাং। তাই বোধহয় চেনা ছকে বাঁধা থাকল না সে। শহিদ জওয়ানদের স্ত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে নজির গড়ল মুম্বইয়ের কিশোরী।
দেশের সেনাদের জন্য দেশবাসীর গর্বের শেষ নেই। কিন্তু সবথেকে অবহেলিত বোধহয় থেকে যান তাঁদের স্ত্রীরা। বিশেষত যখন দেশ রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ হন সেনারা। সরকারি তরফে তাঁদের সাহায্য করা হয় ঠিকই। কিন্তু তা সবসময় পর্যাপ্ত নয়। ফলত বরাবরই অসুবিধায় থাকেন এঁরা। কিন্তু সেনাদের কৃতিত্ব নিয়ে যত গর্ব করা হয়, ততটাই নজরের বাইরে থেকে যান শহিদের বিধবারা। আত্মীয়স্বজনরাও যে চিরকাল তাঁদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন থাকেন, এমনটা নয়। বিশেষ উপার্জনের সুযোগও থাকে না। ফলে কায়ক্লেশেই দিন কাটে তাঁদের। এই পরিস্থিতিই ভাবিয়ে তুলেছিল কিশোরীকে। যেসময় অন্যান্য বন্ধুরা হই-হুল্লোড়ে মেতে থাকে, সে সময় সে নিয়েছে জীবনের এক অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত। ঠিক করেছিল দাঁড়াবে অসহায় শহিদের বিধবাদের পাশে। সেইমতো শুরু হয় উদ্যোগ। আজ যা পত্র-পুষ্পে বিকশিত।
কিশোরীর এই প্রয়াসের কথা শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন বড়রাও। জেলার সৈনিক পরিষদ থেকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সাহায্যের হাত। ক্যাপ্টেন রত্নপার্খি প্রতিটি কাজে তাকে পথ দেখিয়েছেন। শুধু বিধবাদের জন্য টাকা জোগানোই নয়, তাঁরা যাতে প্রয়োজনীয় উপার্জন করতে পারে তার জন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেছে কিশোরী। স্কুল ও জিলা সৈনিক পরিষদের অনুমতি নিয়েই বিভিন্ন অঞ্চলে সেনার বিধবাদের সঙ্গে কথা বলেছে সে। কীভাবে তাঁরা নানারকম কাজ করে অন্যের উপর নির্ভর না করেও জীনধারণ করতে পারেন, তাই শিখিয়ে চলেছে কিশোরী। সরকারি তরফে যে বিকাশের কাজ করা হয়নি, নূন্যতম সাহায্যে দিয়েই যে দায় সারা হয়েছে, সেই অভাববোধই পূরণ করে দিয়েছে গৌঋষি।
তবে এই কাজে একটা বড় পাওনা আছে গৌঋষিরও। এই বিধবারা আসলে বড় একাকী। সেই একাকীত্ব ঘুচিয়ে দিয়েছে গৌঋষি। তার কাজে, স্বতঃস্ফূর্ততায় সে হয়ে উঠেছে ঘরের লোক। অনেকের কাছেই যেন সে হয়ে উঠেছে মেয়ের মতো। গৌঋষি জানাচ্ছে, এ ভালবাসা তার কাছে আশীর্বাদের মতোই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.