প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনও মহিলার সম্মতি না নিয়ে তার উপর জোর খাটিয়ে সঙ্গমের চেষ্টাকেও ধর্ষণ (Rape) হিসেবেই গণ্য করতে হবে। একটি ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলায় এমনই মন্তব্য করল মেঘালয় (Meghalaya) হাই কোর্ট।
জানা যাচ্ছে, ২০০৬ সালে ১০ বছরের এক বালিকাকে যৌন নিগ্রহ করার অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৮ সালে জেলা আদালত অভিযুক্তকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায় শোনায়। সেই সঙ্গে ২৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় অভিযুক্ত।
সেই মামলাতেই এই মন্তব্য করেছে হাই কোর্ট। অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি ছিল, ঘটনার সময় ওই নাবালিকা অন্তর্বাস পরে ছিল। এবং পুলিশের কাছে মেয়েটি জানিয়েছিল তার কোনও রকম যন্ত্রণা হয়নি। আইনজীবীর যুক্তি ছিল, অভিযুক্ত ওই বালিকার শরীরে তার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করিয়েছিল। কিন্তু যেহেতু মেয়েটির পরনে অন্তর্বাস ছিল, তাই প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে এক্ষেত্রে লিঙ্গ যোনিতে প্রবেশ করেনি।
শুনানির পরে মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ অবশ্য জানিয়ে দেয়, যন্ত্রণা হয়েছে কিনা কিংবা অন্তর্বাস খোলা হয়েছিল না হয়নি, এই ধরনের বিষয়গুলি ধর্ষণ না হওয়ার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। পুলিশের কাছে নির্যাতিতা পরিষ্কার জানিয়েছে, অভিযুক্ত তার উপরে জোর খাটিয়েছিল। ডাক্তারি রিপোর্ট থেকেও জানা যাচ্ছে মেয়েটির যোনিতে আঘাত লেগেছিল। গোটা ঘটনায় অসম্ভব মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়েও যেতে হয়েছিল মেয়েটিকে। এক্ষেত্রে এটি ধর্ষণের মামলা হিসেবেই গণ্য হবে। এবং তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ (বি) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এরপর জেলা আদালতের রায়ই বহাল রেখে দেয় হাই কোর্ট।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১২ সালেও একটি মামলায় একই কথা জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ করাটা ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে গণ্য করার ক্ষেত্রে আবশ্যিক নয়। সেই সময় বিচারপতি জানিয়েছিলেন, ”যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ অবশ্যই ধর্ষণের সপক্ষে প্রমাণ। কিন্তু উলটোটা সত্য়িই নয়। যদি লিঙ্গ প্রবেশ না করে থাকে, তাহলেই প্রমাণ হয়ে যায় না যে ধর্ষণ হয়নি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.