সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রুজির টানে ঘর ছেড়েছিলেন তাঁরা। সুদূর রাজস্থান থেকে পাড়ি দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশে। সঙ্গে প্রতিবন্ধী সন্তান। কিন্তু করোনা মহামারির জেরে রুজির সঙ্গে টান পড়েছে প্রাণ নিয়েও। তাই মরিয়া হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য বাধ্য হয়েই সাইকেল চুরি করলেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু তিনি পরিশ্রম করে পেট ভরতে এসেছিলেন, চুরি করতে নয়। তাই বিবেকের দংশনে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি রেখে যান ওই শ্রমিক।
জানা গিয়েছে, কাজের খোঁজে উত্তরপ্রদেশের বরেলি থেকে রাজস্থানের ভরতপুরে এসেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক মহম্মদ ইকবাল। পরিশ্রম করে বেশ দু’পয়সা আয়ও হচ্ছিল তাঁর। কিন্তু করোনা মহামারির জেরে পালটে যায় সব কিছু। কাজকর্ম বন্ধ হয়ে না খেয়ে মরার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় সোমবার রাতে ভরতপুরের রারহার বাসিন্দা সাহাব সিংয়ের সাইকেল চুরি করে বাড়ির উদ্দেশেহ রওনা দেন ইকবাল। কিন্তু তিনি চোর নন, পরিস্থিতি তাঁকে বাধ্য কড়েছে এই কাজ করতে। তাই বিবেকের দংশনে সাহেব সিংয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি লিখে রেখে আসেন তিনি। চিঠিতে লেখা ছিল, “আমি বাধ্য হয়ে এই কাজ করছি। আমি আপনার কাছে অপরাধী। আমার সঙ্গে প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে। তাঁকে নিয়ে বরেলি যেতে হবে। কোনও পথ খোলা না পেয়ে আপনার সাইকেলটি নিয়ে যাচ্ছি। আমায় ক্ষমা করবেন।”
এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তে শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিশিষ্ট সমাজতত্ত্ববিদ রাজীব গুপ্তর কথায়। এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকরা কতটা সহায়-সম্বলহিন। লকডাউন ঘোষণা করার আগে সরকারের উচিত ছিল পরিযায়ীদের বাড়ি ফেরানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা। তাঁরা না পযাপ্ত খাবার পাচ্ছে না মজুরি। ফলে বাধ্য হয়েই শ্রমিকদের একাংশ হেঁটে বাড়ি ফিরছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.