বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: অচল সংসদের কারণ জনগণের করের টাকা নষ্ট হচ্ছে। এবার এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করল সরকারপক্ষ। শনিবার সরকারি সূত্রের খবর বলে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি বিবৃতি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে সংসদের (Parliament) অধিবেশন না চলার জন্য কত কোটি টাকা কী ভাবে নষ্ট হয়েছে সেই খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “এতদিনে মাত্র ১৮ ঘণ্টা সংসদ চলেছে, যা ১০৭ ঘণ্টা চলতে পারত। অর্থাৎ ৮৯ ঘণ্টা জলে গিয়েছে। যাতে করদাতাদের ১৩৩ কোটি টাকা বরবাদ হয়েছে।”
সরকারপক্ষের এই প্রচারকে অবশ্য পাত্তা দিতে নারাজ বিরোধীরা। BJP কোন মুখে এসব কথা বলছে, পালটা প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী পক্ষে উল্লেখযোগ্য সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি বলেছেন, “২০১০ সালে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন একদিনও চলতে দেয়নি তৎকালীন বিরোধী বিজেপি। সেই সময় কত টাকা নষ্ট হয়েছিল সেই হিসাব কি জানা যাবে। বিজেপির হট্টগোলের জেরে সংসদ না চলায় মোট কত কোটি নষ্ট হয়েছে সেটা আগে প্রকাশ করা হোক।”
সরকারের অভিযোগ বিরোধী হট্টগোলে অচল সংসদ। পাল্টা সুখেন্দু (Sukhendu Sekhar Roy) জানিয়েছেন, “প্রয়াত বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজ (Sushama Swaraj) সংসদে দাঁড়িয়েই বলেছেন সংসদের হট্টগোল সংসদীয় গণতন্ত্রেরই অঙ্গ। এটা ভুলে গেলে চলবে না, সংসদ চালানোর দায়িত্ব সরকারপক্ষেরই। অধিবেশন চালানোর জন্য সরকারপক্ষের তরফ থেকে কোনওরকম সদর্থক চেষ্টাই এখনও পর্যন্ত করা হয়নি।” পেগাসাস ইস্যু নিয়ে সংসদের চলতি বাদল অধিবেশনের দু’সপ্তাহ একপ্রকার হই হট্টগোলেই কেটে গিয়েছে। এদিকে পেগাসাস নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবিতে অনড় বিরোধীরা। অন্যদিকে পেগাসাস কোনও ইস্যুই নয়, তাই আলোচনার প্রয়োজন নেই এই যুক্তিতে অনমনীয় শাসক। এই টানাপোড়নে কার্যত অচলই সংসদ। সরকারের তরফে অচলাবস্থা কাটানোর ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh) বিরোধী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সমাধানসূত্র বার করবেন বলে প্রচারও করা হচ্ছে। যদিও বিরোধীরা এখনও পর্যন্ত রাজনাথের কাছ থেকে কোনওরকম ফোন পাননি বলেই জানা গিয়েছে। পেগাসাস ইস্যুতে আলোচনার দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁদের প্রতিবাদ চালিয়েই যাবেন এদিনই সেকথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সুখেন্দু।
সরকার যে বিরোধীদের দাবি মেনে নিয়ে পেগাসাস নিয়ে আলোচনায় রাজি হবে না এদিনের বিবৃতি তারই ইঙ্গিত দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে বিরোধী কংগ্রেস যে অধিবেশন চলতে দিচ্ছে না সেই বিষয়টি প্রচার করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বিজেপি অধিবেশন চালানোর সমাধানসূত্র না বার করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রচারের কাজকে দুর্ভাগ্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। সরকারি সূত্র মারফত বিবৃতি নির্ধারিত দিনক্ষণের আগে বাদল অধিবেশন সমাপ্ত হওয়ার জল্পনা উসকে দিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.