সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটি গাছ, একটি প্রাণ। আর মধ্যপ্রদেশে আক্ষরিক অর্থেই ‘একটি গাছ’কে বাঁচিয়ে রাখতে এখন উঠেপড়ে লেগেছে শিবরাজ সিং চৌহানের সরকার। তারজন্য সরকারি কোষাগার থেকে বছরে খরচ করা হচ্ছে ১২ লক্ষ টাকা।
[অগ্নিগর্ভ রাজস্থানের নাগাউরে জারি ১৪৪ ধারা, বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা]
মধ্যপ্রদেশের সাঁচি বৌদ্ধ মঠটিকে হেরিটেজ সাইটের মর্যাদা দিয়েছে ইউনেস্কো। এই বৌদ্ধ মঠের কিছুটা দূরেই পাহাড় ঘেরা ছোট্ট জনপদ সালমাতপুর। বছর পাঁচেক আগে ভারত সফরে এসে সেখানে একটি অশ্বত্থ গাছের চারা পুঁতেছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মাহিন্দা রাজাপক্ষে। শ্রীলঙ্কা থেকেই ওই অশ্বত্থ গাছের চারাটি নিয়ে এসেছিলেন তিনি। প্রকৃতির নিয়মে সেই চারা গাছটি এখন একটি পূর্ণবয়স্ক গাছে পরিণত হয়েছে। আর সেই গাছটিকে এখন ‘ ভিভিআইপি ট্রি ’-র মর্যাদা দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি কোষাগার থেকে প্রতি বছর খরচ করা হচ্ছে ১২ লক্ষ টাকা। গাছটির চারিদিকে পাঁচিল তোলা হয়েছে। গাছটির উপর ২৪ ঘণ্টা নজর রাখার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষী। ২০১২ সাল থেকে এই অশ্বত্থ গাছটিকে পাহারা দিয়ে আসছেন পরমেশ্বর তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘এখানে মোট চারজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে। আগে অনেকেই এই গাছটিকে দেখতে আসত। তবে এখন দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গিয়েছে।’ শুধু পাঁচিল তোলা বা নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করাই নয়, সালমাতপুরের এই অশ্বত্থ গাছটিকে জল দেওয়ার জন্য আলাদা একটি জলাধারও তৈরি করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। প্রতি সপ্তাহে সালমাতপুরে গিয়ে অশ্বত্থ গাছটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আসেন রাজ্য সরকারের কৃষি দপ্তরের এক উদ্ভিদবিদ। মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, এই অশ্বত্থ গাছ ও লাগোয়া এলাকাটিকে বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় বৌদ্ধ তীর্থক্ষেত্র গড়ে তোলার কাজ চলছে।
[মুসলিম তোষণ করছেন মমতা, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ বিজেপি নেতার]
প্রসঙ্গত, বৌদ্ধদের কাছে এই অশ্বত্থ গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। সাঁচির মহাবোধি সোসাইটির সদস্য ভান্তে চন্দারতন জানিয়েছেন, বহু বছর আগে যে বোধি বৃক্ষের নিচে বসে তপস্যা করে মোক্ষ লাভ করেছিলেন ভগবান বুদ্ধ, ভারত থেকে সেই বোধি বৃক্ষের শাখা শ্রীলঙ্কায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং অনুরাধাপুরা এলাকায় সেটিকে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল।
[স্বল্পমেয়াদি তীব্র যুদ্ধের জন্য ভারতীয় ফৌজকে তৈরি থাকার নির্দেশ উপ-সেনাপ্রধানের]
কয়েক মাসে আগে ঋণ মকুব ও ফসলের ন্যায্য দামের দাবিতে কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের মান্দসৌর। ঋণ শোধ করতে না পেরে মধ্যপ্রদেশে আত্মঘাতী হয়েছেন ৫১ জন কৃষক। এই প্রেক্ষাপটে একটি গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে বছরে ১২ লক্ষ টাকা খরচ করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবিদদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, অন্য কোনও খাতে এই টাকা কী খরচ করা যেত না?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.