ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে গেলে প্রথম শর্ত হল, আতঙ্কিত হবেন না। সরকার ও চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চললে খুব সহজেই এই যুদ্ধ জয় করা যাবে! চিনের ১০০ বছরের বৃদ্ধ থেকে ইটালির রিমিনি শহরের ১০১ বছরের বৃদ্ধ। কিংবা সুইজারল্যান্ডের ৯৫ বছরের বৃদ্ধা। সবাই এভাবেই করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত মুম্বইতেও একই ঘটনা ঘটল। ১৮ দিন ধরে লড়াই করার পর করোনাকে কুপোকাত করে জয়ী হওয়া মুম্বইয়ের এক দম্পতি। চিকিৎসকরা বলছেন, তাঁদের এই যুদ্ধ জয়ের কাহিনী শুনে অনুপ্রাণিত হবেন অন্যরাও।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি কাজের সূত্রে আমেরিকা গিয়েছিলেন মুম্বইয়ের ৩৭ বছরের ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। গত ৬ মার্চ যখন তিনি মুম্বইয়ে ফিরে আসেন তখন এয়ারপোর্টে হওয়া থার্মাল স্ক্রিনিংয়ে কিছু ধরা পড়েনি। কিন্তু, দুদিন পর প্রচণ্ড জ্বর হয়। বাধ্য হয়ে ৯ মার্চ অর্থাৎ হোলির দিন স্থানীয় একটি ডাক্তারের কাছে যান তিনি। ডাক্তার তাঁকে দেখে ওষুধ দিলে বিকেলে জ্বর সেরেও যায়। কিন্তু, তার পরেরদিন অফিস যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শরীরও প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েছিল তাঁর। বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে এসেই ফের পারিবারিক চিকিৎসকের কাছে দৌঁড়ান তিনি। আর সেখানে যাওয়ার পরেই ওই চিকিৎসকের সন্দেহ হয়, ওই যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বৃহন্মুম্বই পুরসভাকে খবর দেন ওই চিকিৎসক। এরপর তাদের সহযোগিতায় ওই যুবককে স্থানীয় কস্তুরবা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। আর ওই যুবকের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ফলাফল প্রকাশ পেলে দেখা যায়, ওই যুবকের সাত বছরের মেয়ের কিছু না হলেও তিনি, তাঁর স্ত্রী এবং তিন বছরের মেয়ে করোনায় আক্রান্ত। রিপোর্ট দেখার পরেই তাঁদের তিনজনকে ওই হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়। কিন্তু, গত ১৯ মার্চ যুবকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে জসলোক হাসপাতালে পাঠানো হয়। অদ্ভুত বিষয় হল, চিকিৎসকরা বা ওই দম্পতি তাঁদের তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তাতে থাকলেও সবথেকে আগে সুস্থ হয় সে।
এপ্রসঙ্গে ওই যুবক বলেন, ‘আমি আক্রান্ত হওয়ার পরেও অতটা ভেঙে পড়িনি যতটা আমার স্ত্রী ও ছোট মেয়ের আক্রান্ত হওয়ার খবরে পড়েছিলাম। বারবার মনে হচ্ছিল আমার জন্য ওদের এই অবস্থা হয়েছে। আর সবথেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছিলাম ছোট মেয়েকে দেখে। তবে ও কিন্তু একটু ভয় পায়নি। তাই আমাদের আগেই ও সুস্থ হয়ে উঠেছে। তবে দুটি হাসপাতালেই আমাদের খুব ভাল চিকিৎসা হয়েছে। তাই বলব, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেই অযথা ভয় পাবেন না। বরং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলুন, ঠিকমতো খাবার খান তাহলেই দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আমার ও আমার পরিবারের মতো আপনারাও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.