ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দু মহিলাদের মতো খরপোশের অধিকার রয়েছে মুসলিম মহিলাদেরও। এক মামলার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এমনই নির্দেশ দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। সেই নির্দেশের উপর এবার তীব্র আপত্তি জানাল মুসলিম ল বোর্ড। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা মামলা দায়ের করবে বলে জানিয়ে দিল মুসলিম ল বোর্ড। তাঁদের দাবি, শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ শরিয়ত আইনের বিরোধী। ফলে শরিয়ত বিরোধী এমন নির্দেশ আমরা মানতে পারি না।
গত বুধবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ আসার পর রবিবার দিল্লিতে এক বৈঠকে বসে মুসলিম ল বোর্ড। বৈঠক শেষে কমিটির তরফে জানানো হয়, “শরিয়ত নিয়মের বিরুদ্ধে এই ধরনের নির্দেশ কখনই সঠিক নয়। একজন মহিলাকে তালাক দেওয়া হলে তিনি কীভাবে খোরপোশ পেতে পারেন?” এই বিষয়ে ল বোর্ডের বক্তব্য, “ভারতের সংবিধান আমাদের অধিকার দিয়েছে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি ও বিশ্বাস অনুযায়ী বাঁচার। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আমাদের সম্প্রদায়ের স্বার্থবিরোধী। শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের সম্প্রদায়ের বিয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হবে।” ল বোর্ডের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদালতের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামবেন তাঁরা।
গত ১০ জুলাই মুসলিম মহিলাদের খোরপোশ সংক্রান্ত এক ‘ঐতিহাসিক’ রায় দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। এক মুসলিম (Muslim) ব্যক্তি ডিভোর্সের পর স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে চাননি। পারিবারিক আদালত তাঁকে মাসিক খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তিনি দ্বারস্থ হন তেলেঙ্গানার হাই কোর্টের। উচ্চ আদালতও একই রায় দিলে তিনি পিটিশন জমা দেন সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু শীর্ষ আদালতেও সেই পিটিশনকে খারিজ করে দেওয়া হয়। বিচারপতিরা জানান, ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারার উল্লেখ করে একথা জানিয়েছেন তাঁরা।
বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, মুসলিম মহিলা (বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার রক্ষা) আইন ১৯৮৬ ধর্মনিরপেক্ষ আইনের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে না। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, ”আমরা ফৌজদারি আবেদন খারিজ করে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে এই সিদ্ধান্তে আসছি যে ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা সমস্ত মহিলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কেবল বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রেই নয়।” সেই সঙ্গেই তিনি আরও বলেন, ”অনেক স্বামীরা বুঝতেই পারেন না যে তাঁদের স্ত্রী, যাঁরা গৃহবধূ, তাঁদের উপরে মানসিক দিক থেকে কতটা নির্ভরশীল। সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের গৃহবধূদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার।” এই ইস্যুতেই এবার তীব্র আপত্তি জানাল মুসলিম ল বোর্ড।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.