সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘জঙ্গি নয়, আমার ছেলে স্বাধীনতা সংগ্রামী।’ এমনটাই বক্তব্য হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মায়ের। ৮ জুলাই ২০১৬, কাশ্মীরে সূচনা হয় এক নয়া রক্তাক্ত অধ্যায়ের। সেদিন ভারতীয় সেনার গুলিতে নিকেশ হয় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিসংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের কমান্ডার বুরহান ওয়ানি। এতদিন চুপ থাকলেও ছেলের মৃত্যুর এক বছর পর মুখ খুললেন বুরহানের মা মাইমুনা মুজাফ্ফর। তাঁর মতে, বহু মায়ের কোল যার জন্য খালি হয়ে গিয়েছে সেই ছেলেই নাকি স্বাধীনতা সংগ্রামী।
[ফেসবুকে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে পোস্ট, গ্রেপ্তার মুসলিম যুবক]
হিজবুল ‘পোস্টার বয়’ বুরহানকে কোকেরনাগের বিমদুরা এলাকায় তার দুই সাগরেদের সঙ্গেই খতম করেছিল সেনাবাহিনী। পাক উসকানিতে উপত্যকায় সন্ত্রাস ছড়ানো থেকে শুরু করে অপহরণ, হত্যা-সহ একাধিক মামলায় জড়িত ছিল সে। বাইশ বছরের এই জঙ্গি নেতার মাথার দাম ছিল দশ লক্ষ টাকা। বুরহানের মৃত্যুর পর এক প্রকার সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর পরিবার। তবে এক বছরের মাথায় অবশ্য ‘জেহাদি’ সুর ধরেছেন তাঁরা। এক জঙ্গিকে স্বাধীনতা সংগ্রামী আখ্যা দিয়ে দেশদ্রোহীদের কার্যত উসকে দিচ্ছেন বুরহানের মা মাইমুনা। ২০১৪ সালে সেনার হাতে নিহত হয় বুরহানের বড় ভাই খালিদ। সেও জঙ্গিসংগঠনের সদস্য ছিল বলে অভিযোগ। অবশ্য দাদার মৃত্যুর আগে থেকেই ঘর ছাড়া বুরহান। নিজের ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র। আইএসআই-এর ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ ঘোষণা করেছিল সে। তবে সাত বছর পর নিথর হয়ে ত্রালের বাড়িতে ফিরেছিল তার দেহ।
বুরহানের মৃত্যুর পর থেকেই অগ্নিগর্ভ কাশ্মীর উপত্যকা। তার মৃত্যুর এক বছর পর ফের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করার আশঙ্কায় রয়েছে সেনা। নেতার মৃত্যুর বদলা নিতে সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালাতে পারে জঙ্গিরা, এমনটাই জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। অবশ্য গোটা উপত্যকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে আগেই। দক্ষিণ কাশ্মীরে যাওয়ার বেশির ভাগ সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ ওখানেই সবচেয়ে বেশি গোলমালের আঁচ করছে প্রশাসন।
[‘দাঙ্গা যাদের ধর্ম তারা আমার বন্ধু নয়’]
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বুরহান ওয়ানির সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা সইফুদ্দিন সোজ। তিনি বলেছিলেন ক্ষমতা থাকলে বুরহানের মৃত্যু রুখে দিতেন তিনি। ওই জঙ্গির সঙ্গে আলোচনার পক্ষেও সেদিন বক্তব্য রেখেছিলেন ওই নেতা। পালটা জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিং সাফ জানিয়ে দেন, জঙ্গিদের প্রতি জঙ্গিদের মতোই আচরণ করা হবে। তবে যাই হোক না কেন উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলন ও জঙ্গিদের রুখতে এবার সেনাকে পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছে কেন্দ্র। অবশ্য কাশ্মীরে কবে শান্তি ফিরে আসবে তা সময়ই বলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.