সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত জানুয়ারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) মালিকানা হস্তান্তর হয়। প্রায় ১২ কোটি টাকার বিনিময়ে টাটা গ্রুপ কিনে নেয় এয়ার ইন্ডিয়াকে। দেনায় জর্জরিত এই সংস্থাকে নতুন রূপে গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল টাটা (Tata) গ্রূপের। সেই উদ্দেশ্যেই কোম্পানির নতুন সিইও হিসাবে নিয়োগ করা হয় তুরস্কের ইলখার আয়চিকে। তারপরে কেটেছে মাত্র দু’সপ্তাহ। এর মধ্যেই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করলেন ইলখার।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এয়ার ইন্ডিয়ার তরফ থেকে জানানো হয়,”কোম্পানির নতুন সিইও (CEO) হিসাবে দায়িত্ত্ব নিতে চলেছেন ইলখার আয়চি।” আগে তুরস্ক এয়ারলাইন্সের সভাপতি হিসাবে কাজ করেছেন এই ইলখার আয়চি। এছাড়াও তিনি তুরস্কের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তায়িপ এর্ডোয়ানের পরামর্শদাতা ছিলেন ১৯৯৪ সালে।
কিন্তু তাঁর পূর্ববর্তী কর্মজীবনের উল্লেখ করেই ইলখার আয়চির নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আরএসএস (RSS)। তুরস্কের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তায়িপ এর্ডোয়ানের নয়াদিল্লির সম্পর্ক খুব মধুর ছিল না। বিভিন্ন বিষয়ে ভারত বিরোধী অবস্থান নেওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে এর্ডোয়ানের। এই কারণেই ইলখার আয়চির নিয়োগ নিয়ে বিজেপি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরএসএস। ইলখার আয়চিকে নিয়োগ করা যাবে না, এমন দাবিও জানানো হয় আরএসএসের তরফে। প্রসঙ্গত, একজন বিদেশি নাগরিককে ভারতীয় উড়ান সংস্থার সিইও হিসাবে নিয়োগ করার জন্য সরকারি ছাড়পত্র প্রয়োজন।
টাটা চেয়ারপার্সন এন. চন্দ্রশেখরনের সঙ্গে একটি মিটিংয়ে ইলখার আয়চি জানিয়েছেন, “আমার নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন লেখা চোখে পড়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও হিসাবে আমার যোগদানের পরে যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। আমার নিযোগ নিয়ে ভুল কথা ছড়ানো হয়েছে।” টাটা গ্রুপের তরফে আরও জানানো হয়, এই কারণেই দায়িত্ব নিতে রাজি হননি ইলখার। এই মিটিংয়ে ইলখার বলেছেন, “আমি একজন পেশাদার মানুষ। বাণিজ্যিক অধিকর্তা হিসাবে আমি সবসময়ে ব্যবসায়িক পেশাদারিত্ব বজায় রাখি।” গোটা ঘটনাপ্রবাহ থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে যুক্ত আর হবেন না। তিনি জানিয়াছেন,”আমি সব দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই পদে কাজ করা আমার পক্ষে একেবারেই সম্মানজনক নয়।” তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া নেতিবাচক মন্তব্যের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইলখার।
টাটা গ্রুপের পক্ষ থেকে এই প্রসঙ্গে আর কিছু জানানো হয়নি। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনায় জোর ধাক্কা খেয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। আবার নতুন করে সিইও খুঁজতে হবে। সেই কাজটিও খুব সহজ হবে না। কারণ এয়ার ইন্ডিয়ার মতো দেনায় ডুবে থাকা সংস্থার দায়িত্ব নেওয়া এবং নতুন করে সংস্থাকে ঢেলে সাজানো যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং কাজ। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, “ইলখার আয়চি এবং এয়ার ইন্ডিয়াকে নিয়ে সরকার খোঁজখবর নিচ্ছে। কারণ গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে ইলখার আয়চি এবং তুরস্কের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.