সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কঃ নাগরাকোটা সেনা ক্যাম্পে সন্ত্রাসবাদী হামলায় সরাসরি যুক্ত এক জইশ-ই-মহম্মদ সদস্যকে পাকড়াও করল এনআইএ। ধৃতের নাম মুনির উল হুসেন কোয়াদরি। শনিবার জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়াড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। ২০১৬-র নভেম্বরে সেনা ক্যাম্পে যে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছিল তিন ফিদায়েঁ জঙ্গি তাদের সরাসরি সাহায্য করেছিল ধৃত কাদরি। সীমান্ত পেড়িয়ে ভারতে প্রবেশ থেকে শুরু করে তাদের আস্তানা দেওয়া এবং পরে সেনা ক্যাম্প পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া সবেতেই হাত ছিল তার।
[ভোটারদের ঘুষ দিচ্ছে বিজেপি, অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ শিব সেনা]
কাদরির গ্রেপ্তারিতে নজিরবিহীন ভাবে এই প্রথম কোনও সন্ত্রাসহানায় সরকারিভাবে ঘোষণা হল জইশ যোগ। ঘোষণা করল এনআইএ। এতদিন ধরে যা সন্দেহ হিসাবে গণ্য করা হচ্ছিল, এবার তা হাতেনাতে প্রমাণিত হল বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও কাদরিকে একাধিক ঘটনায় গ্রেপ্তার করেছিল কাশ্মীর পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে তদন্তকারীদের নজরে ছিল সে। এনআইএ অফিসারেরা জানাচ্ছেন, নাগরাকোটার ঘটনার আগে গা ঢাকা দিয়ে নেপালে পালিয়েছিল কোয়াদরি। উপত্যকায় ফিরেই আবার শুরু করে দেশবিরোধী কার্যকলাপ। গত বছরের নভেম্বর মাসে জইশের শীর্ষস্তর থেকে তার কাছে এসেছিল এই হামলায় সাহায্য করা নির্দেশ। সেই নির্দেশ মতই কাজ করেছিল সে।
[কীভাবে কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে ঢোকে জঙ্গিরা? গোয়েন্দাদের জেরায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য]
কেমন ভাবে রচিত হয়েছিল হামলার রূপ রেখা তাও তদন্তকারীদের সামনে পেশ করেছে ধৃত কোয়াদরি। সে জানায়, হামলার ছক করা হয়েছিল অনেকদিন আগেই। পাকভূমিকে নিশ্চিন্তে বসে সেই ছক তৈরি করেছিল জইশের শীর্ষ নেতারা। তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিত তাকে। সেমত হামলার আগের দিন সাম্বা সেক্টর দিয়ে সেনার নজর এড়িয়ে ভারতে প্রবেশ করানো হয়েছিল তিন ফিদায়েঁকে। সেদিন রাতে কাশ্মীরের একটি হোটেলা থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল তাদের। এরপরেই হামলা চালিয়েছিল তারা। অন্যদিকে শনিবার সকালেই জম্মু-কাশ্মীরে পাঁচ জঙ্গিকে খতম করেছিল সেনা। তারপর শনিবার মধ্যরাতে কুলগামের ১ রাষ্ট্রীয় রাইফেলের ক্যাম্পে জঙ্গিহানার ছক বানচাল করে সেনা। পালানোর সময় দুই পুলিশকর্মীর বন্দুক নিয়ে চম্পট দেয় জঙ্গিরা। এলাকায় টহল দিচ্ছে সেনা। চলছে জঙ্গিদের খোঁজে সার্চ অপারেশন।
[নিপা তাঁকে ডরায় না, ৪০০ চামচিকে নিয়ে শান্তির সংসার বৃদ্ধার]
২০১৬-র ১৬ সেপ্টেম্বর উরির বায়ুসেনা ঘাঁটিতে গত কুড়ি বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হানার ঘটনা ঘটেছিল। ভারতের অভিযোগ ছিল, যাতে সরাসরি দিয়েছিল জইশ ও লস্কর। এই হামলায় শহিদ হয়েছিলেন ১৯ ভারতীয় জওয়ান। চুপ করে না থেকে কড়া উত্তর দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। ঠিক এক সপ্তাহ পর পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে জঙ্গিদের মেরে এসেছিল ভারতীয় প্যারাকমান্ডো বাহিনী। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের করা সেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিল পাক সেনা থেকে জঙ্গি সংগঠনগুলির বুকে। ভারতের করা সেই অভিযানের বদলা নিতে ঠিক তার দু’মাস পর নাগরাকোটার সেনাক্যাম্পে আবার হামলা চালায় জইশের আফজল স্কোয়াডের পাঁচ ফিদায়েঁ। শহিদ হয়েছিলেন সাত জওয়ান-সহ দুই সেনা অফিসার। জম্মু-কাশ্মীরে কুপওয়ারার বাসিন্দা তথা উপত্যকায় জইশের অন্যতম রিক্রুটার মুনির উল হোসেন কাদরি দেশের মাটিতে বসে সেই হামলায় সাহায্য করেছিল ওই তিন জঙ্গিকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.