সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৩২টি গ্রাম। ৩ মাসে জন্মেছে ২১৬টি শিশু। কিন্তু, অবাক করার বিষয় এই ২১৬টি শিশুর মধ্যে নেই একটিও কন্যাসন্তান! শুধু তাই নয়, আরও অন্তত ৬৬টি গ্রামে কন্যাসন্তান জন্মের হার পুত্রসন্তানের তুলনায় নগণ্য। কথা হচ্ছে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার। এই জেলার লিঙ্গ-অনুপাতের পরিসংখ্যান রীতিমতো উদ্বেগজনক। উত্তরকাশীর ৮২টি গ্রাম চিহ্নিত হয়েছে রেড-জোন হিসেবে। যেখানে নারী-পুরুষের অনুপাত অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তবে, সবচেয়ে উদ্বেগের পরিসংখ্যান সম্ভবত কন্যা সন্তান জন্মের হার।
যে ১৩২টি গ্রামে গত ৩ মাসে একটিও কন্যসন্তান জন্মায়নি যার মধ্যে ১৬টি গ্রাম এমন রয়েছে যেখানে গত ৬ মাসে ভূমিষ্ঠ হয়নি কোনও কন্যাসন্তান। কিন্তু, এমনটা কীভাবে সম্ভব? উত্তর পাচ্ছেন না জেলা আধিকারিকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাপক হারে কন্যাভ্রুণ হত্যা না হলে চিত্রটা এমন হওয়া সম্ভব নয়। স্থানীয় এক সমাজসেবী বলছেন, “কন্যাভ্রুণ হত্যা না হলে এমনটা হওয়া সম্ভব নয়। ৩ মাস বা ৬ মাস ধরে কোনও কন্যাসন্তান না হওয়াটা নেহাতই কাকতালীয় হতে পারে না। দিনে দুপুরে ভ্রুণহত্যা হচ্ছে অথচ সরকার বা প্রশাসন কোনও পদক্ষেপই করছে না।” গর্ভস্থ ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ ভারতে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তা সত্ত্বেও কীভাবে এমনটা হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা।
উত্তরকাশী জেলার জেলাশাসক ডা. আশিস চৌহান বলছেন, “যে যে এলাকায় কন্যাসন্তান জন্মের হার শূন্য বা নগণ্য সেই এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। আমরা এই এলাকাগুলিকে পর্যবেক্ষণে রাখছি। কী কারণে এমনটা হচ্ছে, সেটাও খোঁজার চেষ্টা চলছে।” জেলাশাসক এ প্রসঙ্গে জেলার আশা কর্মীদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকও করেছেন। যে সব জেলায় শিশুমৃত্যুর পরিমাণ বেশি সেসব এলাকায় আরও বেশি নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি এমনই যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র রাওয়াত। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলছেন, “এ বিষয়ে আধিকারিকদের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। এটা ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের বিরোধী।” শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গত ছ’মাসে এই গ্রামগুলিতে কতজন গর্ভবতী ছিলেন এবং কটি সন্তানের জন্ম হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.