সুব্রত বিশ্বাস: হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় উত্তাল দেশ। এরপরও একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে বিচলিত নানা মহল। আর এই পরিস্থিতিতে কোনও দায় নিয়ে আগ্রহী নয় রেল। তাই মহিলা কর্মীদের রাতের শিফট আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হল রেলের তরফে। পূর্ব রেল-সহ বিভিন্ন রেল বিভাগ সার্কুলার জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, রাত দশটা থেকে সকাল ছ’টা পর্যন্ত মহিলা কর্মীদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না। রেলের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে, তাঁদের নিরাপত্তার জন্য এই পদক্ষেপ। তবে আসানসোলের ডিআরএমের পক্ষে সিনিয়র ডিপিওর নির্দেশাবলিতে বলা হয়েছে, রেলের হাসপাতালগুলিতে নার্সদের রাতের শিফটে কাজ করতে হবে।
গত পাঁচ বছরে রেলের বিভিন্ন বিভাগে অসংখ্য মহিলা কর্মী নিয়োগ হয়েছে। অপারেটিং, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল বিভাগে অগুনতি মহিলা কর্মী রয়েছেন। গ্রুপ ডি’তে শান্টিং স্টাফ, কিম্যান, ট্রাকম্যান থেকে গ্রুপ সি’তে স্টেশন ম্যানেজার, ট্রেনের চালক, গার্ড – সব বিভাগেই কর্মরত মহিলা কর্মী। প্রত্যেক মহিলা কর্মীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবার রেলের এই নির্দেশ। সকাল ছ’টা থেকে দুপুর দুটো ও দুপুর দুটো থেকে রাত দশটা, এই দুই শিফটই মহিলা কর্মীদের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। মহিলা চালক ও গার্ডদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে অপারেশন বিভাগকে। দশটার পর কোনও গাড়ি গন্তব্যে পৌঁছলে সেই গাড়িতে মহিলাদের কোনও কাজ দেওয়া যাবে না।
পূর্ব রেলের এক কর্তার কথায়, আপৎকালীনভাবে রাতে ডিআরএম অফিস, কন্ট্রোল অফিসে চতুর্থ শ্রেণির মহিলা কর্মীরা চলে আসেন। তবে তাঁরা আসেন একেবারে স্বেচ্ছায়। তাঁদের বুকিং করে আনা হয় না। ফলে সেই নির্দেশাবলির রেকর্ড থাকে না। আগে রাতে মহিলা কর্মীদের দিয়ে কাজ করানো হলেও, এখন আর তেমনটা হয় না। কারণ, মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে দায়বদ্ধতা সাধারণত নিতে চান না আধিকারিকরা। তারউপর কাজের চাপ হলে বিরক্ত হয়ে অভিযোগ তুলতে পারেন মহিলা কর্মীরা। এই ধরনের ঝামেলা এড়াতে মহিলাদের রাতের শিফটে রাখতে চান না বিভাগীয় প্রধানরা।
মহিলা যাত্রীদের সুরক্ষায় লেডিজ স্পেশ্যালগুলি এসকর্ট করে মহিলা আরপিএফ জওয়ান। এবার থেকে মহিলা জওয়ানদের দিয়েও রাতে কাজ করানো চলবে না। আরপিএফ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রাত ন’টার পরে ট্রেনগুলির এসকর্টে থাকবেন পুরুষ আরপিএফ। আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান হলেও তাঁরা মহিলা। ফলে তাঁদের সুরক্ষা ব্যবস্থাতেও খামতি রাখতে চায় না রেল। সরাসরি পরীক্ষা না দিয়েও স্বামী অথবা আত্মীয়ের মৃত্যুতে মহিলারা চাকরি পান রেলে। এই ধরনের মহিলাদেরও কোনওরকম অসুবিধা করা চলবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে রেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.