সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কা ছিলই। ১৯৯৯ সালে ‘সুপার সাইক্লোনে’ দশহাজার মানুষের মৃত্যু হয় ওড়িশায়। দেখতে দেখতে অনেকগুলো বছর কেটে গেলেও প্রতিটি ঘূর্ণিঝড় ফিরিয়ে আনে সেই স্মৃতি। কিন্তু এবার ‘ডানা’র তাণ্ডবেও ‘মৃত্যুশূন্য’ ওড়িশা। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি জানিয়েছেন, ‘‘মিশন সফল। ‘ডানা’র তাণ্ডবে রাজ্যে কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।’’ কিন্তু এই বিপর্যয় মোকাবিলায় সাফল্যের কৃতিত্ব বিজেপি নিতে চাইলেও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এসবই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সরকারের পরিকল্পনার সুফল। ২০২১ সালে ‘যশ’ নামের ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তৎকালীন ওড়িশা সরকারের সাফল্যকে কুর্নিশ করেছিল রাষ্ট্রসংঘও। সেই স্মৃতি ফিরে এল ডানার তাণ্ডবের মধ্যেই।
২০০০ সালে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী হন নবীন। তার আগের বছরই সুপার সাইক্লোনে বিপর্যস্ত হয়েছে ওড়িশা। আর সেই সময় থেকেই পরিকাঠামোর শক্তি বাড়িয়ে বিপর্যয় মোকাবিলায় কোমর বেঁধে নামে নবীন প্রশাসন। ২০০৫ সালে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন এবং ২০০১ সালে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তৈরির বহু আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ওড়িশা ডিজাস্টার অথোরিটি তথা ওএসডিএমএ।
অচিরেই বিশ্বমানের বিপর্যয় মোকাবিলা ম্যানেজমেন্ট তৈরি হয়ে যায় ওড়িশায়। তার সুফল পেয়েছে রাজ্যবাসী। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০২১ সালে ‘যশে’র তাণ্ডবের মোকাবিলায় ৭ লক্ষ মানুষকে আগেই নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেবারের বিপর্যয়ে মৃত্যু হয় ৩ জনের। যা ১৯৯৯ সালের বিপর্যয়ের তুলনায় অনেকাংশে কম। আর এবার ‘ডানা’র ঝাপটে কোনও প্রাণহানিরই খবর মেলেনি। ২০২১ ও ২০১৩ সালে রাষ্ট্রসংঘ প্রশংসা করেছিল ওড়িশা সরকারের প্রয়াসের।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, ক্ষমতা বদলের পর মাঝির হাত দিয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে নবীন পট্টনায়েকের স্বপ্ন। তা যতই মাঝি এই কৃতিত্ব নিজের বলে দাবি করুন, এর পিছনে নবীন পট্টনায়েকের অবদান কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় না। উল্লেখ্য, নবীন বুধবারই রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করেছিলেন ঘুর্ণিঝড়ের সামনে না ঘাবড়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে। সব মিলিয়ে ক্ষমতায় না থেকেও, ওড়িশার বিপর্যয়ের মোকাবিলায় না থেকেও রইলেন তিনি, দুই যুগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকা জনপ্রিয় নেতা নবীন পট্টনায়েক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.