সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছরে একবার দল বেঁধে উপকূলে ডিম দিতে আসে ওরা। তার পর আবারও ফিরে যায় সাগর জীবনে। এবারও আসার সময় হয়েছিল বিপন্ন প্রজাতির এই অলিভ রিডলে কচ্ছপগুলির। এল ঠিকই তবে মৃত অবস্থায়। সমুদ্র উপকূলে দেখা গেল হাজারেরও বেশি মৃত কচ্ছপ। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে বনদপ্তর। কীভাবে এতগুলি কচ্ছপের মৃত্যু হল তার কোনও কূলকিনারা পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। ঘটনায় স্বভাবিকভাবেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এই অলিভ রিডলে কচ্ছপগুলিকে ‘তফসিল ১’ বা বিপদাপন্ন প্রজাতির তালিকায় রাখা হয়। স্থানীয় ভাষায় এদের বলা হয় ‘পাঙ্গুনি আমাই’। বিপন্ন কচ্ছপ সংরক্ষণে বনদপ্তরের পাশাপাশি এগিয়ে আসে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। ডিম সংগ্রহ, ডিম ফুটতে সাহায্য করা থেকে শুরু করে নিরাপদে শাবকগুলিকে সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়। এত কিছুর পরও হাজার ডিমের মধ্যে মাত্র একটি বা দুটি কচ্ছপ প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত যায়। বিরাট সংখ্যায় এই কচ্ছপের মৃত্যু নজিরবিহীন বলে মনে করছে বনদপ্তর। আশঙ্কা করা হচ্ছে, উপকূলে হাজার মৃতদেহ ভেসে আসার অর্থ, অন্তত ৫ হাজার কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে সমুদ্রে। কীভাবে তাদের মৃত্যু হল জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত।
মৃত কচ্ছপের ময়নাতদন্তের পর জানা গিয়েছে, জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে সেগুলির। সাধারণত জলের নিচে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শ্বাস ধরে রাখতে পারে এরা। এর পর সমুদ্রের উপরি তলে আসতে হয় তাদের। কোনও কারণে কচ্ছপগুলি উপরে আসতে পারেনি। যার জেরেই এই মৃত্যু। এই ঘটনায় তদন্তকারীদের অনুমান, হয়ত কোনও মৎসজীবীর জালে আটকে পড়েছিল কচ্ছপগুলি। যার জেরেই এই ঘটনা। এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যসচিব এন মুরুগানন্দন। কচ্ছপ আসার এই সময়ে সমুদ্রের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কারা এই অপকর্ম করেছে তাদের খোঁজ পেতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে বাস বিলুপ্তপ্রায় এই অলিভ রিডলে কচ্ছপদের। গভীর সমুদ্র থেকে প্রতিবছর চেন্নাইয়ের উপকূলে ভিড় জমায় এরা। কখনও কখনও প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয় এদের। ডিম পাড়া শেষ হলে শীতের শেষে আবার দল বেঁধে সমুদ্রে ফিরে যায় কচ্ছপরা। এপ্রিল মাসে সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনোর পর। একটু বড় হয়ে বাচ্চারা নিজেরাই পাড়ি দেয় সমুদ্রের উদ্দেশে। সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় এই কচ্ছপদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.