সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘তুমি কাশী যেতে পারো, যেতে পারো গয়া.. পাবে না এমন দ্বিতীয় অপয়া…’। অদ্বিতীয় অপয়া, তেলেঙ্গানার ভোটের মরশুমে এখন এই অপয়াদেরই খোঁজ করছেন নেতারা। লক্ষ্য একটাই, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে অপয়ার চিহ্ন ফেলে আসা। যাতে তাঁর অমঙ্গল হয়, এবং তিনি ভোটে হেরে যান। প্রশ্ন হচ্ছে, এমন ‘সার্টিফায়েড অপয়া’ পাওয়া যাবে কোথায়? তেলেঙ্গানা তথা দক্ষিণ ভারতের মানুষের বিশ্বাস পেঁচা হল পৃথিবীর সবচেয়ে অপয়া প্রাণী। তাই শাসক-বিরোধী দুই শিবিরেরই এখন লক্ষ্য পেঁচা মেরে তা বিরোধী প্রার্থীর বাড়ি বা নেতার বাড়িতে ফেলে রেখে আসা। যাতে তাঁদের অমঙ্গল হয় এবং তাঁরা ভোটে পরাস্ত হন। এটা নেহাতই কুসংস্কার, কিন্তু এর জেরেই বিলুপ্তপ্রায় পেঁচা আরও অবলুপ্তির পথে ঢলে পড়ছে।
এমনিতে তেলেঙ্গানায় পেঁচা সেভাবে পাওয়া যায় না। তাই পার্শ্ববর্তী রাজ্য কর্ণাটক থেকে শুরু হয়েছে পেঁচা আমদানি। পাচারকারীরা কর্ণাটক থেকে চোরাশিকারিদের কাছ থেকে অল্প দামে পেঁচা কিনে তা নিয়ে যাচ্ছে তেলেঙ্গানায়। সেখানে পেঁচাগুলি বিক্রি হচ্ছে ৩-৪ লক্ষ টাকা দামে। প্রথমে প্রশাসন পেঁচার চাহিদার কারণ বুঝে উঠতে পারছিল না। সম্প্রতি এমনই একটি চক্র পুলিশের জালে ধরা পড়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পরই উঠে এসেছে এই কুসংস্কারের তত্ত্ব।
এমনিতে ভারতে মোট ৩৩ প্রজাতির পেঁচা পাওয়া যেত একটা সময়। কিন্তু এখন তাঁর বেশিরভাগই বিলুপ্তির মুখে। মোটে গোটা তিনেক প্রজাতি এখনও দেখা যায়। কিন্তু সেই বিলুপ্তপ্রায় পাখিটিকেও ভোটযুদ্ধে অস্ত্র করছে রাজনীতির কারবারিরা। পাচারকারীদের বয়ান অনুযায়ী, প্রথমে পেঁচা ধরে আনা হচ্ছে, তারপর তান্ত্রিকের মাধ্যমে তাঁর মধ্যে অশুভ শক্তি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তারপর তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে কেটে বিরোধী নেতাদের বাড়িতে গিয়ে ফেলে আসা হচ্ছে। নেতাদের আশা, এভাবেই তাদের কপালে শিকে ছিড়বে। সহজ করে বলতে গেলে, নিজের যোগ্যতার থেকে একটি কুসংস্কারের উপরই বেশি ভরসা রাখছেন প্রার্থীরা। আর এই কুসংস্কারের বলি হচ্ছে নিরীহ পেঁচা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.