ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠেলায় পড়লে মৃতকেও বাঁচিয়ে তুলতে পারে পাকিস্তান! আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী লস্কর-ই-তইবার অপারেটিভ সাজিদ মীরকে বাঁচিয়ে তুলেছিল তারা। প্রথমে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে স্রেফ হাত ধুয়ে ফেলতে চেয়েছিল ইসালামাবাদ। কিন্তু অচিরেই ফাঁস হয়ে যায় তাদের মিথ্যাচার। দেখা যায় বহাল তবিয়তে আছে সাজিদ মীর। অপারেশন সিঁদুরের আবহে ফের চর্চায় পাকিস্তানের সেই কুকীর্তি।
সাজিদ মীর, ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী। যাকে বারবার নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েছে ভারত। কিন্তু সেই দাবিতে আমল দেয়নি পাকিস্তান। আন্তর্জাতিকস্তর থেকে চাপ বাড়তেই সাজিদকে মৃত বলে ঘোষণা করে দেয় ইসলামাবাদ। তাদের সেই মিথ্যার বেলুন কিছুদিনের মধ্যে ফেটে যায়। একাধিক রিপোর্ট দাবি করতে থাকে সাজিদ মীর বহাল তবিয়তে রয়েছে। ২০১২ সালে আমেরিকার ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছিল, লস্কর-ই-তইবা সংগঠনে উচ্চপদে রয়েছে মীর। সেখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেয় সে। ফরাসি ম্যাজিস্ট্রেটও জানায়, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে উচ্চপদে কর্মরত সে। শেষ পর্যন্ত সন্ত্রাসের ধূসর তালিকা থেকে বের হতে পাকিস্তান ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ে। পাকিস্তান জানায়, মীর জীবিত। ২০২২ সালে ইসলামাবাদ জানায়, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাহোরের সন্ত্রাসবিরোধী জেলে রাখা হয়েছে। ১৫ বছরের জেল হেফাজত এবং ৪ লক্ষ ২০ হাজার পাকিস্তানি রুপি জরিমানা করা হয়।
ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে ফের চর্চায় পাকিস্তানের এই ভোলবদল। পাকিস্তান যে সন্ত্রাসের আশ্রয়দাতা সেই প্রমাণ দিতে গিয়ে বুধবার বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি বলেন, “পাকিস্তান বরাবর সন্ত্রাসকে মদত দিয়ে যাচ্ছে। সাজিদ মীরের ঘটনার এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ। যেখানে এক সন্ত্রাসবাদীকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তাকে আবার জীবিত বলে ঘোষণা করে দেয়।” এতেই পাকিস্তানের দ্বিচারিতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ বলে দাবি করেন বিক্রম মিসরি।
কে এই সাজিদ মীর?
মুম্বইয়ে লস্করের হামলার দায়িত্ব ছিলেন সাজিদ মীর। গোটা হামলার পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল তার উপর। এই হামলায় অভিযুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১১ সালে ২১ এপ্রিল ইলিনয়সের আদালতে সাজিদকে দোষী সাব্যস্ত করে। তার বিরুদ্ধে আমেরিকার বাইরে ভিন্ন রাষ্ট্রের সরকারি সম্পত্তি নষ্টের ষড়যন্ত্র, হামলার মাল-মশলা জোগানো, সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়া, দেশের বাইরে আমেরিকার নাগরিককে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। এমনকী, হামলার সময় বন্দী মুক্তির বদলে এক হামলাকারীরে ছাড়িয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল মীর। মুম্বইয়ের ভিড়েঠাসা এলাকায় বিস্ফোরণ, হামলার সময় আগুন লাগিয়ে দেওয়া ও গ্রেনেড হামলারও নির্দেশ মীরই দিয়েছিল বলে ওই আদালত জানিয়েছিল। এরপর লস্করের চাঁইয়ের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২২ এপ্রিলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইলিনয়েসের ওই আদালত। ২০১৯ সালের এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড-এর তালিকায়ও মীরের নাম যোগ হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.