Advertisement
Advertisement
Shikh Sentiment

শিখদের প্রতি কত দরদ! স্বর্ণমন্দিরে হামলায় প্রমাণ করল পাকিস্তান, শিক্ষা নেবে খলিস্তানিরা?

স্বর্ণমন্দির লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পাকিস্তান, প্রতিহত করে ভারত।

Pakistan Disrespect Shikh sentiments targeted Golden Temple in Amritsar
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:May 19, 2025 6:39 pm
  • Updated:May 19, 2025 6:50 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খলিস্তান ঝুলছে খুড়োর কলে! তাতেই খুশ শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। সীমান্তপারের মদতদাতারা গুরু গ্রন্থসাহিবের পরোয়া করে না, কবে বুঝবে খলিস্তানপন্থীরা? নতুন করে এই প্রশ্ন উঠছে, কারণ পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতে ভারতীয় সেনা ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানোর পর পালটা অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পাকিস্তান। অর্থাৎ কিনা খলিস্থানের সমর্থকরা ভারত বিরোধিতায় যাদের সাহায্য নিচ্ছে, তারাই শিখদের পবিত্র তীর্থস্থানে হামলা চালাতে দু’বার ভাবছে না। নেহাত আগেই ‘নিরাপত্তার ছাতায়’ ঢেকে ফেলা হয়েছিল স্বর্ণমন্দিরকে, তাই সামান্যতম আঁচড় পড়েনি। সে অবশ্য ভিন্ন বিষয়। আসল কথা, পাক সেনা স্বর্ণমন্দিরকে টার্গেট করায় উসকে উঠছে অপারেশন ব্লু স্টারের স্মৃতি। সেবার আইএসআইয়ের পরামর্শেই কি স্বর্ণমন্দিরকে ঢাল বানিয়েছিলেন শিখ নেতা জার্নাল সিং ভিন্দ্রেনওয়াল এবং তাঁর দলের লোকেরা? 

১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় গুলজার পরিচালিত, ওম পুরি, চন্দ্রচূড় সিং, জিমি শেরগিল অভিনীত ছবি ‘মাচিস’। সেখানে দেখা গিয়েছিল কীভাবে সুড়ঙ্গ পথে পাকিস্তানে গিয়ে অস্ত্রশিক্ষা নেয় খলিস্তানি উগ্রপন্থীরা। গত শতাব্দীর আট ও নয়ের দশকে প্রায় প্রতিদিন পাঞ্জাব প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় মৃত্যুমিছিল লেগে থাকত। অশান্ত পাঞ্জাবে উগ্রপন্থীদের নিকেশ করতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন ‘সুপার কপ’ কেপিএস গিল। অবশ্যই বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না গিলের ভূমিকা। তথাপি দেশের সীমান্ত প্রদেশ পাঞ্জাবকে অস্থির করতে পাকিস্তান যে খলিস্তান আন্দোলনকে ব্যবহার করেছিল, এই বিষয়ে একমত বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে এসে পড়ে স্বর্ণমন্দিরের মনখারাপ করা ইতিহাস। শিখ নেতা জার্নাল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র, দলবল নিয়ে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের ভিতরে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। ১৯৮৪ সালের ১ জুন ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকার। ভারতীয় সেনার হামলায় ভিন্দ্রানওয়ালে মুক্ত হয় শিখদের পবিত্র তীর্থ স্বর্ণমন্দির। এরপর ১৯৮৪ সালের অক্টোবর মাসে দুই শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা। অন্যতম হত্যাকারী সতবন্ত সিং জেরায় জানিয়েছিলেন, পবিত্র তীর্থস্থলে সেনা অভিযানের প্রতিশোধ নিতেই এই পদক্ষেপ করেছিলেন তাঁরা।

সতবন্তের এই আবেগকেই বার বার ব্যবহার করেছে পাকিস্তান। অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয়েছে শয়তানের ষড়যন্ত্র। ২০২৩ সালে হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার ঘটনায় নয়াদিল্লির গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-কে অভিযুক্ত করে নতুন করে ভারত বিরোধিতা শুরু হয় কানাডায়। বেশ কয়েকটি হিন্দু মন্দিরে হামলা চালায় খলিস্তানপন্থীরা। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারত-কানাডা সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছায়। এই অশান্তির পিছনেও আইএসআইয়ের ছায়া দেখেছেন বিশ্লেষকরা।

খলিস্থানপন্থীরা অবশ্য এই কারণেই পাকিস্তানকে ‘মধুসূদন দাদা’ ভাবতে পারেন। কিন্তু তারাই যে সাম্প্রতিক ভারত-পাক সংঘর্ষে স্বর্ণমন্দির লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, তাও তো সূর্য ওঠার মতো সত্যি। তবে? আসলে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার সময় এসে গিয়েছে তথাকথিত শিখ বিচ্ছন্নতাবাদীদের। তাদের এবার বুঝতে হবে যে পাকিস্তান কারও বন্ধু হতে পারে না। একটি গুরুদ্বার ধ্বংস হলে তাদের কিচ্ছু যাবে-আসবে না। কারণ খলিস্তান তাদের কাছে খুড়োর কল মাত্র! ভারতে উগ্রপন্থা ছড়ানোর মেশিন। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement