সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩৭ বছর আগের একদিন। আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে গিয়েছিল মৃত্যুর গন্ধ। প্রাণ গিয়েছিল হাজার হাজার মানুষের। চুরাশির (Bhopal Gas Tragedy) সেই দুঃসহ আতঙ্ক ফিরল ভোপালে। মধ্যরাতে কারখানা থেকে ফের গ্যাস লিক। ফের অসুস্থ বহু। ফের মাঝরাতে ঘর ছাড়ার হিড়িক। যদিও শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকল কর্মীরা।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার মধ্যরাতে। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত আড়াইটে নাগাদ হঠাত ভোপালের মাদার ইন্ডিয়া কলোনিতে একটি পানীয় জলের কারখানা থেকে ক্লোরিন গ্যাস লিক করা শুরু করে। ক্লোরিনের ঝাঁঝালো গন্ধে অসুস্থ হতে থাকেন স্থানীয়রা। কারও শ্বাসকষ্ট, কারও তীব্র মাথা যন্ত্রণা, কারও বমি, কারও চোখ জ্বালা করা শুরু হয়। বেশ কয়েকজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। দুটি শিশু গ্যাসের ঝাঁঝালো গন্ধে অজ্ঞান হয়ে যায়। তাদের দ্রুত হাসপাতালে ভরতি করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, রাতে মোট ১৫ জনকে হাসপাতালে ভরতি করতে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি পানীয় জলের কারখানায় ক্লোরিন (Chlorine) গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক শুরু হয়। প্রথমে সিলিন্ডারটি ঠিকও করা হয়। কিন্তু পরে সেটি থেকে আবার ক্লোরিন লিক করা শুরু করে। এই ক্লোরিন গ্যাস শরীরের জন্য মারাত্মক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শ্ত্রুকে ঘায়েল করার জন্য এই গ্যাস ব্যবহার হত। টানা ক্লোরিন লিক হতে থাকায় অসুস্থ হতে থাকেন স্থানীয়রা। প্রায় আধঘণ্টা লিক হওয়ার পর পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সিলিন্ডারটিকে জলের মধ্যে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। তারপর অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এই মাদার ইন্ডিয়া কলোনি (Mother India Colony) সেই এলাকা যেখানে চুরাশির গ্যাস দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। সেই ভয়াল স্মৃতি এখনও এখানকার বাসিন্দাদের অনেকের মনে টাটকা। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক গ্রাস করে তাঁদের। শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। এই এলাকায় অন্তত ৪০০ পরিবারের বাস। দ্রুত এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করতে থাকেন বাসিন্দারা। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়। যদিও ভোপালের কালেক্টর অবিনাশ লাভানিয়া জানিয়েছেন, পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরনোর আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.