সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেঁদে কেঁদে লাল হয়ে যাওয়া চোখ দু’টো দিনভর খুঁজে চলেছে বাবা-মাকে। ঘুমের মধ্যেও ডুকরে কেঁদে উঠছে ১৪ মাসের দুধের শিশুটি। ক্রমাগত জিজ্ঞেস করে চলেছে, “মা-বাবা কোথায়? কখন আসবে?” কিন্তু তার একের পর এক প্রশ্নের কীই-বা উত্তর দেবেন বছর সত্তরের ঠাকুমা? তিনিও তো নিজেও জানেন না কবে ফিরবেন তাঁর ছেলে-বউমা। তাই কার্যত অন্ধকারেই দিন কাটাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীর বাসিন্দা শীলা তিওয়ারি ও তাঁর দেড় বছরের নাতনি চম্পক।
১৯ ডিসেম্বর বারাণসীর বেনিয়া বাগ এলাকায় CAA বিরোধী প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন সমাজকর্মী একতা ও তাঁর স্বামী রবি শংকর। ১৪৪ ধারা ভেঙে জমায়েত করায় বাকিদের সঙ্গে তাঁদেরও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর থেকেই জেলের অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। ২৩ ডিসেম্বর তাঁদের জামিনও খারিজ করে দেয় উত্তরপ্রদেশের এক আদালত। পরবর্তী শুনানি ১ জানুয়ারি। নতুন বছরে পরিবারের কাছে, মেয়ের কাছে ফিরতে পারবেন বলেই আশায় বুক বাঁধছেন ওঁরা।
এদিকে নাতনিকে নিয়ে নাজেহাল ঠাকুমাও। ১৯ ডিসেম্বর তাঁর কাছেই কোলের মেয়েকে রেখে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়েছিলেন ওঁরা। তারপর আর ফেরা হয়নি। ঠাকুমা শীলা তিওয়ারি জানান, “কিছুতেই ওকে (চম্পক) খাওয়াতে পারছি না। রাতে ভীষণ কান্নাকাটি করছে। মোবাইল ফোন দিয়ে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু কতক্ষণ এভাবে রাখা যায়?” ঠাকুমার আক্ষেপ, “ওই তো দুধের শিশু। মোবাইল ফোন নিয়ে সারাদিন বসে থেকে চোখ লাল করে ফেলছে। তারপরেও খাওয়াতে পারছি না। মাকে ছাড়া এতটুকু বাচ্চা থাকতে পারে নাকি?”
কিন্তু পুলিশ বলছে সমাজকর্মী একতা ও রবিশংকরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা ১৪৪ ধারা না মেনে জমায়েত করেছেন। এ প্রসঙ্গে এসপি প্রভাকর চৌধুরি জানান, “৫৬ জন পরিচিত ও ২০০ জন অপরিচিত ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” প্রসঙ্গত, CAA বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় হিংসা ছড়িয়েছিল। হিংসা রুখতে বহু প্রতিবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন ২১ জন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.